দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ। ২৩ বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের দায়ে চারজনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে আগামী ২০ মার্চ। ভোর সাড়ে পাঁচটায় তাদের ফাঁসি হবে। দিল্লি কোর্ট এই নিয়ে চারবার তাদের ফাঁসির দিন ঘোষণা করল।
বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ আসামি পবন গুপ্তার ক্ষমাভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। এর আগে অপর তিন অপরাধী অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিং-এর প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। তাদের সামনে ফাঁসি বিলম্বিত করার আর কোনও পথ খোলা নেই।
দিল্লি সরকার আদালতকে জানায়, অপরাধীদের আর ক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এরপর দিল্লি কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা তাদের ফাঁসির দিনক্ষণ স্থির করেন। চারজনের উকিলও কোর্টকে জানিয়ে দেন, মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচার জন্য তাদের সামনে আর কোনও আইনি পথ খোলা নেই। চার অপরাধী রয়েছে তিহাড় জেলে। জেল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছিল, ফাঁসির নতুন দিনক্ষণ ঘোষণা করার জন্য তারা আদালতে আবেদন করবে।
নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন, “আশা করি চারজনের ফাঁসির চূড়ান্ত দিন স্থির হয়ে গিয়েছে। আমার মেয়ে মরার আগে বলে গিয়েছিল, অপরাধীদের যেন শাস্তি হয়। তাহলে আর কেউ ওই ধরনের অপরাধ করতে সাহস পাবে না।”
জেল সূত্রে খবর, চার অপরাধীকে তিহাড়ের ৩ নম্বর জেলে রাখা হয়েছে। ফাঁসির সাজা পাওয়া অপরাধীদের এখানেই রাখা হয়। চারজন চারটি আলাদা সেলে রয়েছে। প্রতিটি সেল ছ’ফুট বাই আট ফুটের। চারদিকে দিক ঘেরা এই সেলগুলিতে কোনও লোহার বিম বা রেলিং নেই। চারদিকের দেওয়ালে কোথাও কোনও কাপড় দেওয়া নেই। প্রতিটি সেলের জন্য ২৪ ঘণ্টা দু’জন করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে। এমনকি সেল লাগোয়া বাথরুমে গেলেও তাদের মাথা যাতে দেখতে পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা রয়েছে। এই ধরনের ব্যবস্থা এই জেলে এর আগে দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছেন কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, প্রতিটি সেল দিনে দু’বার করে পর্যবেক্ষণ করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বাইরে থেকে কী কী জিনিস আসছে তা পরীক্ষা করে তারপর ঢুকতে দেওয়া হয়। প্রতিটা সেলে দুটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। জেলের সুপারের ঘরে ২৪ ঘণ্টা সেই সিসিটিভি মনিটর করা হয়।
তিহাড় জেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ফাঁসির সাজা পাওয়ার পর চার অপরাধীকে এই সেলগুলিতে নিয়ে আসার আগে দেখে নেওয়া হয়েছিল, সেলের কোনও দেওয়ালে যেন কোনও পেরেক জাতীয় জিনিস বা ধাতব জিনিস না থাকে। কোনও ভাবেই যাতে নিজেদের আহত করতে না পারে চারজন, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছিল।
জেলের এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে কেবলমাত্র সেলের দেওয়ালে নিজেদের মাথা ঠুকে নিজেদের আহত করতে পারে চার অপরাধী। এই পদ্ধতি বেশিরভাগ অপরাধীই নেয়। নিজেকে আহত করে জেলের নিরাপত্তার দিকে প্রশ্ন তুলে ফাঁসি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই চারজন তা করতে গেলে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা সেলের মধ্যে ঢুকে তাদের আটকে দেবে।”