দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: কোভিড সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তা রুখতে এ বার প্রত্যেক থানা ও পুর এলাকায় সেফ হোম গড়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে বেশ কয়েক ধাপ এগনো হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত নির্দেশিকা থানা ও পুরসভাগুলির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মূলত উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের সেফ হোমে রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ১০০-র বেশি সেফ হোম রয়েছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে এই সেফ হোমের সংখ্যা আরও বাড়াতে চাইছে রাজ্য সরকার।
এখন বাংলায় প্রতিদিন কমবেশি ২৫ হাজার করে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে সংক্রামিতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “অনেক রাজ্য টেস্টের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে। তাই সেখানে সংক্রমণ কম দেখাচ্ছে। কিন্তু বাংলায় টেস্ট বাড়ছে বলেই এত সংক্রমণ ধরা পড়ছে।”
মৃত্যু হার উল্লেখ করে মমতা বলেছিলেন, রাজ্যে মোট করোনা সংক্রামিতদের ২ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে আবার ৮৭ শতাংশের ক্রনিক অসুখ রয়েছে। অভয় দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অযথা করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে উঠছেন।”
এমনিতে জুন মাসেই সেফ হোম গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। বেশ কিছু পুরসভা এলাকায় কমিউনিটি হল ব্যবহার করে তা গড়েও তোলা হয়েছে। কিন্তু এবার সেটাকেই সর্বত্র করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সরকারের অনেকের মতে, যাঁদের শরীরে করোনা পজিটিভ মিলছে তাঁদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গের রোগী। ফলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রাখা মানে গুরুতর রোগীদের জন্য সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া। হাসপাতালে যাতে সিরিয়াস রোগীদের রাখা যায় তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবেই সেফ হোমের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য।
উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের জন্য বারাসত স্টেডিয়ামে হওয়া সেফ হোম শনিবার পরিদর্শনে যায় কোভিড ম্যানেজমেন্ট প্রটোকল মনিটরিং কমিটি। এই কমিটির সদস্য ডাঃ বিবর্তন সাহা, ডাঃ মৌসুমী রায় চৌধুরী সাহা, ডাঃ দেবাশিস নন্দী এদিন সেফ হোমে থাকা রোগীদের সঙ্গে কথাও বলেন। তাদের সুবিধা অসুবিধার কথাও জানতে চান তাঁরা।
ওই কমিটির যুগ্ম কো অর্ডিনেটর ডাঃ বিবর্তন সাহা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কেউই ভাবতে পারবেন না যে বারাসত স্টেডিয়ামকে সেফ হোম বানানো যায়। সেফ হোমে সাপের উপদ্রব নিয়ে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ডাঃ বিবর্তন সাহা জানান এতো বড়ো স্টেডিয়ামে দুটো একটা সাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। তিনি জানান করোনা আক্রান্তরা তাঁদের জানিয়েছেন তাঁরা সেফ হোমে ভালই আছেন। পরিষেবাও এখানে ঠিকঠাক পাচ্ছেন তাঁরা।