দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূল ছেড়ে কি বিজেপির পথে তিনি? শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এই জল্পনার মধ্যেই সারদা কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়িয়ে গিয়েছে সম্প্রতি। তাঁর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন, এমন কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম উল্লেখ করে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে জেলবন্দি সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের নামে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছেন সুদীপ্ত। এডিজি-র (কারা) দপ্তরে ‘প্রিজনার্স পিটিশন’ হিসাবে সুদীপ্ত সেনের নাম করে ওই চিঠি জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, ওই চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও বিমান বসুর নাম রয়েছে। আর এরপরই সিবিআই অধিকর্তাকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
সূত্রের খবর, চিঠিতে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন, চাপ ও প্রভাব খাটিয়ে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠি লেখানো হয়েছে। আর তা করা হয়েছে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার পরই। চিঠির বিষয়ের জায়গায় শুভেন্দু লিখেছেন,’সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলা সারদাকাণ্ডের তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা’। সেখানে শুভেন্দু লিখছেন, ‘বিরোধী দলের রাজনীতিকদের সঙ্গে এখন আমার নামও রয়েছে সুদীপ্ত সেনের ওই চিঠিতে। এই ধরণের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠিতে এমন সময় আমার নাম নেওয়া হল, যখন আমি পশ্চিমবঙ্গের সেচ, জলসম্পদ ও পরিবহণমন্ত্রীর পদ থেকে সবেমাত্র ইস্তফা দিয়েছি। আমি ২৭ নভেম্বর ইস্তফা দেওয়ার পরই ১ ডিসেম্বর ওই চিঠি লেখা হয়।’
শুধু তাই নয়, সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে ওই চিঠি জোর করে লেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি লিখেছেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, চিঠির লেখককে প্রভাবিত করা হয়েছিল। দুর্নীতির তথ্য গোপন করতে চাইছেন তিনি। সিবিআই এই দুর্নীতির তদন্ত করছে। তাই অধিকর্তা হিসেবে আপনাকে অনুরোধ করছি, সুদীপ্ত সেনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠির সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হোক, এমনকী লেখার সময় এবং প্রেক্ষাপটও। উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য আপনাকে গোটা বিষয়টি জানালাম।’
উল্লেখ্য, জেলবন্দি কেউ কোনও কর্তৃপক্ষের কাছে পিটিশন করতে গেলে তা সংশোধনাগারের সুপার ও এডিজি-র (কারা) মারফৎ করতে হয়। ১ ডিসেম্বর লেখা ওই চিঠি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কারা কর্তৃপক্ষও। বতর্মানে সারদা মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁরা সুদীপ্তর চিঠি সরকারি ভাবে এখনও পাননি। পেলে চিঠির সত্যতা যাচাইয়ের পরই নথি হিসেবে তদন্তের অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইন বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ‘একজন অভিযুক্তের চিঠি নয়, তদন্তকারীর কাছে দেওয়া তাঁর বয়ান বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাত বছর ধরে সিবিআই বা ইডি কারও কাছে সারদা কর্তা এবিষয়ে কিছুই জানাননি। অথচ সেই সুযোগ ছিল। তদন্তকারী অফিসারকে তথ্য জানানোর ইচ্ছে প্রকাশ করলে আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই বয়ান রেকর্ড করা যেত।’