দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন উত্তেজনার পারদ উঁচু তারেই বাধা ছিল। শুক্রবার কৌশলগত ভাবে তা আরও চড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এদিন সকালে আগাম ঘোষণা না করেই লাদাখে পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। লেহ-র নিমোতে সেনা জওয়ান ও অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্বল কখনও শান্তি কায়েম করতে পারে না। তা পারে একমাত্র সাহসীরাই।”

কমিউনিস্ট চিনের নাম মুখে না আনলেও বেজিংকে কড়া বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সাম্রাজ্য বিস্তারের জমানা খতম হয়ে গিয়েছে। এখন উন্নয়নের জমানা। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হয় পরাস্ত হয়েছে, কিংবা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে”।

লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অঞ্চলে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে গত ১৫ জন এক সেনা অফিসার সহ কুড়ি জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। পাল্টা আঘাতে চিনা বাহিনীরও এক অফিসার সহ অন্তত ৪৫ জন হতাহত হয়েছে। তার পর থেকেই লাদাখে ফরওয়ার্ড পোস্টে ভারতীয় বাহিনী ফুঁসছে।

শুক্রবার সেনাবাহিনীর সেই উত্তেজনায় আরও অক্সিজেন ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভারতের এই পবিত্র মাটির আপনারা বীর সন্তান। আপনাদের অসীম সাহস ও ভিতরের আগুন দেখেছে শক্রপক্ষ। ভারতের প্রতিটি মানুষ সে তিনি দেশেই থাকুন বা বিদেশে—বিশ্বাস করেন দেশকে নিরাপদ ও মজবুত রাখতে আপনারা ভীষণ ভাবে সক্ষম। গোটা দেশ আপনাদের পাশে রয়েছে।” মোদীর কথায়, “আপনারা যে উচ্চতায় মোতায়েন রয়েছেন, আপনাদের সাহস তার থেকেও উঁচু। আপনাদের বাহুর বল এই পর্বতমালার থেকেও বেশি। আর আপনাদের আত্মবিশ্বাস, প্রত্যয় ও আস্থা এই পর্বত শিখরের থেকেও অটল।” প্রধানমন্ত্রী যখন এই বক্তৃতা দেন তখন জওয়ানদের মধ্যে থেকে ‘ভারত মাতার জয়’ ও ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনি ওঠে।

কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী আজ যে বার্তা দিয়েছেন তাকে বেজিংয়ের উদ্দেশে কার্যত হুঁশিয়ারি বলা যায়। এই কঠোর বার্তার প্রয়োজন যে ছিল তা দেশের কূটনীতিকরা সমস্বরেই বলছিলেন। তা কেন জরুরি তাও বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলতে চেয়েছেন, ভারত শান্তির পক্ষে। কিন্তু দুর্বল মনোভাব দেখালে শান্তি স্থাপন সম্ভব নয়। তখন অপর পক্ষ পেয়ে বসে। বরং যারা সাহস দেখাতে পারে তারাই শান্তি কায়েম করতে পারে। অর্থাৎ বেজিং চোখ রাঙালে ভারতও চোখ রাঙাতে জানে। সুতরাং বেয়াদপি বন্ধ করে চিন আলোচনার টেবিলে আসুক।

সমানে সমানে কথা হোক। সমঝোতা সূত্র উভয়েই পালন করুক। সীমান্তে শান্তি কায়েম হোক। নইলে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের জবাব ভারত ভালই দিতে জানে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here