করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এ রাজ্যও তা থেকে মুক্ত নয়।যেভাবে এই রোগ ছড়াচ্ছে বলে খবর আসছে তাতে যে কোন উপায় গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখে দিতে না পারলে বিপদ ভয়াবহ আকার নেবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।রাজ্য সরকার তাই প্রথম থেকেই সতর্কতার প্রয়াস হিসেবে নানা কর্মসূচি নেবার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে।এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত সদর্থক বলেই আমরা মনে করি।
তিনি যেভাবে ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে একের পর এক সিদ্দান্ত নিয়েছেন তা যথেষ্ট দায়িত্ব সচেতন একজন প্রশাসকের পরিচয় বহন করে।প্রথমে স্কুল ও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ দিন ও পরে আবার ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত সিরিয়াস।
সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা ও অন্যান্য নানা ব্যবস্থা সরকার নিয়েছে যা সরকারের এ বিষয়ে ভাবনা ও গুরুত্বের প্রমাণ বলে মনে করা যায়।
সরকার যখন এ উপসর্গ নিয়ন্ত্রনের মরিয়া প্রয়াস করছে তখন এ বিষয়ে সাধারণ মানুষেরও উচিত সরকারের সঙ্গে সহায়তা করা কিন্তু খুব পরিতাপের কথা সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে এখনও ততটা সচেতনতার পরিচয় দিয়ে উঠতে পারছে না।সম্প্রতি রাজ্য সরকারের এক উচ্চপদস্থ আমলার পুত্র যে ভাবে শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবানু নিয়ে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াল,আমলা মা যেভাবে তার পুত্রকে হাসপাতালে না রেখে শফিংমল ও সরকারি অফিসকাচারিতে নিয়ে গিয়ে উপস্থিত হলেন তাতে পরিষ্কার শুধু মাত্র পুথিগত বিদ্যা দিয়ে সচেতন নাগরিক তৈরি করা সম্ভব নয়।
অচেতনতা হয়তো ছড়িয়ে রয়েছে সমাজের আনাচে কানাচে।এ ছাড়াও রয়েছে অন্ধ বিশ্বাস ও সেই বিশ্বাসকে আশ্রয় করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার সংকীর্ণ চেষ্টা।খুবই দুঃখের কথা দেশ ও দশের েই সংকটের সময়তেও কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা তুসতে মানুষের মধ্যে অন্ধ বিশ্বাস উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
যেমন এই মাত্র কয়েকদিন আগে এ রাজ্যের এক জায়গায় এক বিজেপি নেতা তার দল বল নিয়ে মাছে নেমে গেলেন । প্রচার নিয়ে যে গোরুর মূত্র পান করলে করোনা ভাইরাস মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।সেই প্রচার কে সামনে রেখে প্রচার হল ও মানুষকে প্রকাশ্যে গরুর মূত্র পান করানো হল।এতে বিজেপির রাজনৈতিক প্রচার কতটা প্রসারিত হল বোঝা না গেলেও এর ফলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হল তা নিয়ে কোন সংশয় নেই।ভয়াবহ একটা বিপদ যখন আমাদের শিয়রে দাঁড়িয়ে তখন এই আজগুবি প্রচার যে প্রতিরোধের প্রয়াসকে দূর্বল করে দেয় তা নিয়ে কারোর সন্দেহ থাকার কতা নয়।
একই সঙ্গে সমস্ত সাধারণ মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছি আন্তর্জাতীক সাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থা ওয়াল্ড হেল্থ অরগানাইজেসন বা হু তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এই ভাইরাস কে প্রতিহত করতে বা এর ক্ষয়ক্ষতি রুখতে সবার আগে দরকার গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখে দেওয়া তা না হলে কিন্তু এটা মহামারির আকার নেবে।
আমাদের রাজ্যসরকার সেই প্রয়াস সেই চেষ্টাই করছে আমাদের দায়িত্ব সরকারের কাজে সহায়তা করা।এই সহায়তাই আমাদের ও আমার জীবন রক্ষার একমাত্র রক্ষাকবচ হতে পারে।সেই প্রয়াস সার্থক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।