দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: সাইক্লোন ফণীর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রাজ্য৷ একের পর এক ট্যুইট করে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ এদিন ট্যুইট করে তিনি বলেন সাইক্লোনের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য সরকার৷ অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷

তিনি আরও জানান, যে কোনও প্রয়োজনে প্রশাসনকে পাশে পাবেন মানুষ৷ আগামী ৪৮ ঘন্টা সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

  • খড়গপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় ২ দিন থেকে নিজে ফণীর পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • মানুষকে উদ্বেগ না-করে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
  • ৪৮ ঘণ্টার জন্য যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মসুচি তিনি বাতিল করেছেন।

মানুষকে উদ্বেগ না-করে সতর্ক থাকতে বলেছেন মমতা। দুর্যোগকে ভয় না-পেয়ে সবাই একসঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলায় করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার সকালেই ওড়িশায় আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এই মুহূর্তে ওড়িশাতেই অবস্থান করছে এই ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ফণীর সম্ভাব্য গতিপথ পশ্চিমবঙ্গের দিকে। বিকেলের পরেই এই রাজ্যে ঢুকতে চলছে ফণী। তবে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার পর তার শক্তি কিছুটা কমবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শনিবার রাতের দিকে এই ঘূর্ণিঝড় চলে যাবে বাংলাদেশের দিকে। অর্থাৎ আগামী প্রায় ৩০ ঘণ্টা এই রাজ্যে থাকবে ফণী।

জেনে নিন আগামী ৩০ ঘণ্টায় কেমন হবে তার গতিপ্রকৃতি:

  • আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম ও দিঘা থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে ফণী। এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোন থেকে শক্তি খুইয়ে এই মুহূর্তে ফণী পরিণত হয়েছে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনে। ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তা।
  • ঘূর্ণিঝড়ের গঠন অনুযায়ী এর চারটে ভাগ। কেন্দ্রে থাকে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ বা আই। তাকে ঘিরে থাকে মেঘের দেওয়াল। মেঘের দেওয়ালের বাইরে থাকে স্পাইরাল ব্যান্ড ও সবথেকে বাইরের অঞ্চলকে বলা হয় বহিঃসীমা অঞ্চল। ঘূর্ণিঝড়ের চোখে ঝড়ের গতিবেগ থাকে সবথেকে বেশি। জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলের পরেই ফণীর প্রভাব পড়তে শুরু করবে পশ্চিমবঙ্গে। অর্থাৎ ফণী’র বহিঃসীমা অঞ্চল ও স্পাইরাল ব্যান্ড প্রবেশ করবে এ রাজ্যে।
  • এই স্পাইরাল ব্যান্ড কয়েকশ কিলোমিটার ব্যাসার্ধযুক্ত হয়। এর প্রভাবে বিকেলের পর থেকে ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায়। ফণীর দাপট সবথেকে বেশি দেখা যাবে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দুই ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতায়। বিকেলের পর ঝড়ের গতিবেগ হবে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।
  • আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়বে ঝড়ের গতিবেগ। শুক্রবার মাঝরাত নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ। এই সময় ঝড়ের গতিবেগ হবে সবথেকে বেশি। অবশ্য এ রাজ্যে প্রবেশ করার সময় আরও কিছুটা শক্তি খুইয়ে ফণী পরিণত হবে সিভিয়ার সাইক্লোনে। পূর্বাভাস, এই সময় ৯০ থেকে ১১৫ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় ও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি হবে।
  • আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে নদিয়া পেরিয়ে ফণী বাংলাদেশের দিকে ঢুকতে শুরু করবে। শনিবার রাতের মধ্যে রাজ্য ছেড়ে বেরিয়ে যাবে এই ঘূর্ণিঝড়। বাংলাদেশে ঢোকার সময় আরও কিছুটা শক্তি খুইয়ে ট্রপিক্যাল সাইক্লোনে পরিণত হবে ফণী।
  • তবে বাংলাদেশে চলে গেলেও তার প্রভাব থাকবে রাজ্যে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রবিবারের পর থেকে ধীরে ধীরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here