দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ ভারত ও পাকিস্তানকে নিয়ে যখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশা প্রকাশ করলেন, দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে শীঘ্র। সংঘর্ষের অবসান ঘটবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামে এক সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, আমি ভারত ও পাকিস্তান থেকে ভালো খবরই পেয়েছি। ভালো খবর বলতে তিনি কী বোঝাতে চাইছেন, স্পষ্ট করেননি।
বুধবার সকালেই পাকিস্তানের বিমান ভারতের বায়ুসীমা লঙ্ঘন করে। এদেশের সেনা ঘাঁটিতে আক্রমণের চেষ্টা করে। ভারতের বায়ুসেনা সেই চেষ্টা রুখে দেয়। পাকিস্তানের একটি এফ – ১৬ বিমান গুলি করে নামানো হয়। ভারতেরও একটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ে। তার আগে মঙ্গলবার ভোররাতে ভারতের মিরাজ ২০০০ বিমানগুলি পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ ই মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিতে বোমা ফেলে আসে।
বৃহস্পতিবারই আমেরিকা থেকে ভারত ও পাকিস্তান, উভয় দেশকেই বার্তা দেওয়া হয়, সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিন। দুই দেশের সরকার নিজেদের মধ্যে কথা বলুক। পাকিস্তানের সমালোচনা করে বলা হয়, ওই দেশটি যেন জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় না হয়ে ওঠে। জঙ্গিদের অর্থের তহবিল ফ্রিজ করে দিক পাকিস্তানের সরকার।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে সরাসরি ভারতের পক্ষে বিবৃতি দেয় আমেরিকা। তারা বলে, ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আমেরিকার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেদেশের নেভি সিল যদি পাকিস্তানের অ্যাবোতাবাদে ঢুকে ওসামা বিন লাদেনকে মেরে আসতে পারে, তাহলে আমরাও পাকিস্তানে ঢুকে আঘাত হানতে পারি।
এর মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শান্তির জন্য আবেদন জানান। কিন্তু ভারতের বায়ুসেনার পাইলটকে যেভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছে ভারত। বুধবার ওই বিমান চালকের একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান। তাতে দেখা যায়, পাইলট আহত হয়েছেন। ভারত অভিযোগ করে, জেনিভা কনভেনশন অনুযায়ী বন্দি সৈনিকদের প্রতি যেমন ব্যবহার করা উচিত, পাকিস্তান তা করছে না।
তার পরেই পাকিস্তান থেকে আর একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, বন্দি পাইলট চা পান করছেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, পাকিস্তানের সেনা অফিসাররা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহারই করেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ফের সরব হল আমেরিকা। দুই দেশকেই তারা সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের সরকারকে ফের সতর্ক করে বলেছে, আপনাদের দেশ যেন জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় না হয়ে ওঠে। জঙ্গিদের তহবিল ফ্রিজ করে দেওয়ার জন্যও ইসলামাবাদকে অনুরোধ করা হয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক দশক বাদে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের বায়ুসেনা পরস্পরের বিরুদ্ধে আঘাত হানার চেষ্টা করছে। বুধবারই পাকিস্তানে বন্দি হয়েছেন এক ভারতীয় পাইলট। এর পরে আমেরিকার মুখপাত্র ভারত ও পাকিস্তানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সীমান্তে সব রকমের সামরিক তৎপরতা বন্ধ করুন। উত্তেজনা কমাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন। দুই দেশের সরকার পরস্পরের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করুক।
এর পরেই আমেরিকা বলেছে, দুই প্রতিবেশী দেশের চেষ্টা করা উচিত যাতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পালন করা উচিত। পরোক্ষে পুলওয়ামা কাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।
দিল্লি দাবি করেছে, পাকিস্তানের হাতে বন্দি ভারতীয় পাইলটকে দ্রুত সুস্থ অবস্থায় মুক্তি দিতে হবে। পাকিস্তান যেভাবে বিনা প্ররোচনায় হামলা চালিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলি ভারতের সেনা ঘাঁটির ওপরে আক্রমণ চালিয়েছে, তারও নিন্দা করা হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শান্তির জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।