শুভেন্দুকে মানাতে সক্রিয় ঘাসফুল শিবির

0
1967

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: একুশের নির্বাচনের আগে ঘাসফুল-শুভেন্দু তরজা অস্বস্তি বাড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরে। বিভিন্ন অরাজনৈতিক সভায় শুভেন্দুর নানা মন্তব্য দলের সঙ্গেই দূরত্বের ইঙ্গিত স্পষ্ট করেছে। পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বনিবনা এখন অলীক কল্পনা বলেই মনে করা হয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসও বিষয়টি আর এড়িয়ে যেতে রাজি নয়। শোনা যাচ্ছে, তাই রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের এই বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় দল। 

কলকাতায় ইতিমধ্যেই এক বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদের সঙ্গে শুভেন্দুর আলোচনা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দলের এক মন্ত্রী ও প্রাক্তন সাংসদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছিল বলে খবর। যদিও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন দু-পক্ষই। বলা যায়, কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন এর সত্যতা। তবে সূত্রের খবর, এতেই দমতে রাজি নয় তৃণমূল। আগামীতে দলের এক শীর্ষনেতার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। এক সংবাদপত্র প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দলের এক নেতা জানিয়েছেন ”শুভেন্দু এখনই কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেনি। সুতরাং, আলোচনার রাস্তা উন্মুক্ত।” 

পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দুর কর্মসূচি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য শোরগোল পড়ে গিয়েছে। দিন কয়েক মমতার ডাকা মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। ১০ নভেম্বর ‘নন্দীগ্রাম দিবস’-এ শুভেন্দু ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র বন্যারে সভা করেন শুভেন্দু এবং নন্দীগ্রামে আলাদা সভা হয় তৃণমূলের। জটিল পরিস্থিতি তো ছিল এই ঘটনা আবার তা উস্কে দেয়। শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেছিলেন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, ফিরহাদ হাকিমের মতো নেতারা। পাল্টা চড়াও হয়েছিলেন শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু। 

এসব তো চলছিলই তাঁর মাঝেই কাঁথিতে শুভেন্দুর বাড়িতে পৌঁছন ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। মন্ত্রী বাড়িতে না থাকায় বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা ও শুভেন্দু বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের তরফে ‘মানভঞ্জনে’র জন্য এসেছিলেন, দাবি তৃণমূল সূ্ত্রের। পরিস্থিতি সবটা এখনই নিয়ন্ত্রনে আসেনি। শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন শুভেন্দু নিজের বক্তব্য রাখুক। শোনা হোক সবটা, তারপর আলোচনায় তা মেটানোর চেষ্টা করা যেতে পারে৷

যদিও শুভেন্দু বিজেপিতে যাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে তিনি এখনই কিছু স্পষ্ট করেননি। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ও শুভেন্দুর মধ্যেকার মতান্তর যে বিধানসভা নির্বাচনে দলের জন্য ভাল নয়, তা দিব্যি বুঝতে পারছে সকলে। তাই এই পরামর্শ ও আলোচনার রাস্তায় হাঁটা বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। প্রসঙ্গত, একসময় পশ্চিমবঙ্গের একাংশেক লাল দূর্গ শুভেন্দু একা হাতেই সবুজ গালিচায় রূপান্তরিত করেন। বিগত এক দশক ধরে শুভেন্দুর নেতৃত্বেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস শাসন করে যাচ্ছে। সেই দুর্গে ফাটল ধরাতে চাইছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। 

যেহেতু শুভেন্দু দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছু বললেনি, তাতে তৃণমূল সূত্রের খবর, ”তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্তটা বোঝার চেষ্ট করা হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস সবটা ঠিক হতে পারে।” মঙ্গলবারের পর আগামীতেও দলের প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে শুভেন্দু অধিকারীর।

Previous articleসেনার উর্দিধারী এগারো জন গ্রেপ্তার গুয়াহাটিতে
Next articleগঙ্গাসাগর মেলা কি হচ্ছে এবার!সিদ্ধান্ত নিতে নবান্নে বৈঠক ১৯ নভেম্বর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here