দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাফায়েল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে বিকৃতভাবে উপস্থাপিত করছেন। বিচারপতিরা যা আদৌ বলেননি, তা বলেছেন বলে দাবি করছেন তিনি। সোমবার রাহুল স্বীকার করলেন, সত্যিই তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে এমন কিছু বলেছেন যা বিচারকেরা বলেননি। তাঁর কথায়, রাজনৈতিক প্রচারের সময় উত্তেজনার বশে কিছু কথা বলে ফেলেছিলাম। কোর্ট কখনই তা বলেনি।

সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশে দেওয়া বিবৃতিতে রাহুল বলেন, আমি যা যা বলেছি, তা বিরোধীরা আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ করে, তাদের রায়কে ভুলভাবে উদ্ধৃত করছেন রাহুল। কৈফিয়ৎ দেওয়ার জন্য তাঁকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল। বিজেপিও তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছিল।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ গত সপ্তাহে বলেন, রাহুল গান্ধী মিডিয়ায় ও জনসভায় সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য বলে যা চালাতে চাইছেন, তা ঠিক নয়। আমরা পরিষ্কার করে দিতে চাই, কোর্ট কখনও ওই কথা বলেনি। আমরা শুধু বলেছিলাম, কয়েকটি নথি কোর্টে গ্রাহ্য হবে।

রাফায়েল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, মিডিয়ার হাতে যে গোপন নথিগুলি রয়েছে, তা প্রমাণ হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে। পরে কংগ্রেস সভাপতি উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে বলেন, সারা দেশ বলছে, চৌকিদার চোর হ্যায়। এবার সুপ্রিম কোর্টও ন্যায়বিচারের কথা বলল। আজ তো উৎসবের দিন।

বিজেপি অভিযোগ করে, রাহুল বিচারপতিদের বক্তব্য বলে এমন অনেক কিছু বলছেন, যা তাঁরা আদৌ বলেননি। এরপর সুপ্রিম কোর্ট রাহুল গান্ধীর বক্তব্য জানতে চায়। বিচারপতিরা বলেন, আমরা কখনও এমন কথা বলিনি।

কংগ্রেস ভোটের আগে কয়েরক সপ্তাহ ধরে অভিযোগ করে আসছে, ফ্রান্সের দাসো কোম্পানি থেকে রাফায়েল জেট বিমান কেনার সময় বড় ধরনের অনিয়ম করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউপিএ আমলে ওই বিমানের যা দাম ধার্য হয়েছিল, পরবর্তীকালে অনেক বেশি দামে কেনা হচ্ছে। সর্বোপরি দাসো কোম্পানির অফসেট পার্টনার করা হয়েছে শিল্পপতি অনিল অম্বানীর সংস্থাকে।

ওই সংস্থার যুদ্ধবিমান বানানোর কোনও অভিজ্ঞতা নেই। যাদের অভিজ্ঞতা আছে, সেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রাফায়েল চুক্তির মাধ্যমে অনিল অম্বানীর লাভ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। বিজেপি ও অনিল অম্বানীর সংস্থা একবাক্যে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কংগ্রেস সভাপতির এই মন্তব্যের পরই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বিজেপি নেত্রী মিনাক্ষী লেখি। এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দেয় যে তারা কোথাও এমন কথা বলেনি যে ‘চৌকিদার নরেন্দ্র মোদী চোর হ্যায়’। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে ক্ষমা চাইতে হল রাহুলকে। তিনি নির্বাচনী প্রচারে উত্তেজনার বশে এই কথা বলে ফেলেন বলে জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here