দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতার নাইসেডে আজ থেকেই শুরু হচ্ছে ভারত বায়োটেকের টিকার ট্রায়াল। প্রথম টিকার ইঞ্জেকশন নিয়েছেন বিপ্লব যশ নামে এক স্বেচ্ছাসেবক। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে।
কলকাতায় টিকা চলে এলে প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হবেন তিনিই, এমন প্রস্তাবই দিয়েছিলেন প্রাক্তন মেয়র ববি হাকিম। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে কলকাতায় এসে পৌঁছেছে কোভ্যাকসিনের ১,০০০টি ডোজ। ২ ডিসেম্বর থেকে ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল নাইসেড। আজ বেলার দিকে নাইসেডে পৌঁছে যান রাজ্যের মন্ত্রী। টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
টিকা নেওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “টিকা নিয়ে একদম সুস্থ আছি। ওনাদের ধন্যবাদ জানাই এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। ওনাদের আরও বলেছি যত তাড়াতাড়ি রেজাল্ট নিয়ে যাতে জনসাধারণের জন্য এই ভ্যাকসিন চালু করা যায়।“ সেই সঙ্গেই রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “টিকা নেওয়ার পরে আমাকে আধঘণ্টা বসিয়ে রেখেছিল। দেখলাম কোনও অসুবিধা হয়নি। ভাল আছি। আমার একটুখানিও যদি অসুবিধা হয় কিছু যায় আসে না। যদি প্রাণও হানি হয় তাহলেও কিছু যায় আসে না। মানুষের যদি ভাল হয় সেটাই হবে আমার কাছে লাভ। আশা করছি এই ট্রায়াল সফল হবে এবং ভারতবাসী খুব তাড়াতাড়ি করোনার টিকা পেয়ে যাবে।”
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন বানিয়েছে ভারত বায়োটেক। কোভ্যাক্সিন হল ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন অর্থাৎ ভাইরাল স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করে বানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) থেকে সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে ল্যাবোরেটরিতে তার স্ক্রিনিং করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট বানিয়েছে ভারত বায়োটেক।
বায়োসেফটি লেভেল-৩ ল্যাবোরেটরির সুবিধা থাকায় ভারত বায়োটেকের ভাইরোলজিস্টরা সংক্রামক ভাইরাল স্ট্রেনের বিশেষ অংশ চিহ্নিত করে তাকে আলাদা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ ভাইরাল প্রোটিনের বিশেষ অংশ স্ক্রিনিং করে বার করে নিয়েছেন। এরপরে সেই সংক্রামক স্ট্রেনকে বিশেষ বিজ্ঞানসম্মত উপায় পিউরিফাই করে তাকে নিষ্ক্রিয় বা ইনঅ্যাকটিভ (Inactive)করেছেন ।
নাইসেড জানাচ্ছে, এই টিকা এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে কোল্ড স্টোরেজের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়। মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে কোভ্যাক্সিন টিকার ভায়াল। ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবকদের। দেশের ২৪টি কেন্দ্রে কোভ্যাক্সিন টিকার তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। প্রায় ২৬ হাজার জনের ওপরে টিকার ট্রায়াল হবে। যার মধ্যে কলকাতায় হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে।