দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: আর পাঁচটা ছেলের মতো চেনা ছিল না ছেলেটির শৈশব। তবে মন বলত ‘তার জীবন ফুটবল’। বাবা-র সামান্য এক মনিহারি-র দোকান। সকাল বিকেল কোনরকমে চাল ফুটতো হাড়িতে। দারিদ্রতার উপস্থিতি টের পেয়েও নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছেলেটি। এভাবেই অতিক্রান্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি বছর। বছর তিনেক আগে বাবা-র জীবনাবসান। সংসারের দায়িত্ব মা-এর কাঁধে। কিন্তু দুই বোন ও মা-কে নিয়ে দিন কাটানো ছেলেটি তো হার মানতে রাজি নয়। শেষ কয়েক বছরে লড়াইটা আরও কঠিন হয়েছিল। তবে যুদ্ধের কঠিন পথ শেষ করে রবিবারের পরন্ত বিকেলে যেন যুদ্ধ জয়ের হাসি। আই লিগের প্রথম ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল-এর চেনা মুখ মনোজ মহম্মদ। হ্যাঁ কথা হচ্ছে রায়গঞ্জের সেই ছোট্ট ছেলেটিকে নিয়ে। দারিদ্রতার চরম সীমায় বাস করেও আজ তার স্বপ্ন স্বার্থক। তিনি আজ বাংলার ফুটবলে অন্যতম লাল হলুদ তারকা। কিন্তু কেমন সূচনাটা? মনোজ তখন ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র। ২০১০সালে রায়গঞ্জে শুরু হলো ইস্টবেঙ্গল রায়গঞ্জ ওয়েলফেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমি। যা শুরু হতেই সেখানে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছিল মনোজ। শুরু হয়েছিল লক্ষে অবিচল থেকে পথচলা। গতকাল খেলা শেষে মনোজ বলছিলেন, “নিজের পরিবার-কে সবসময় সাথে রাখতে চাই”। “অতীতে আমার কোচ উত্তম চক্রবর্তীকে আজকের জয় উৎসর্গ করবো”। মনোজের সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই খুশি তার পরিবার। দুই বোন জ্যোৎস্না ও রোশেনারা-র মুখের হাসি তা বারম্বার প্রমান করছিল। উল্লেখ্য গত ২০১৬সালে ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলে অভিষেক ঘটে মনোজ মহম্মদের। কোচ রঞ্জন চৌধুরীর কোচিং-এ শুরু হয় নতুন করে অনুশীলন। অনুর্ধ ১৮ আই লিগে গত বছর ইস্টবেঙ্গলের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন মনোজ। আর রবিবারের যুবভারতী-তে লাল হলুদের জয় যেন তাকে জানান দিল ভালোবাসা আজ সফল। লাখ লাখ মানুষের মনে তখন ভালোবাসার নাম মনোজ মহম্মদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here