দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ “যাঁরা কৃষি আইনের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা অপমান করছেন কৃষকদের।” দেশ জুড়ে কৃষি আইন নিয়ে বিক্ষোভের মাঝে এভাবেই বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবারই দিল্লির কেন্দ্রস্থলে ইন্ডিয়া গেটের কাছে বিক্ষোভ দেখায় পাঞ্জাব যুব কংগ্রেস। একটি ট্র্যাক্টর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মোদী দাবি করেন, সংসদের সদ্য শেষ হওয়া অধিবেশনে যে বিলগুলি পাশ হয়েছে, তাতে কৃষক, শ্রমিক, তরুণ ও নারীরা লাভবান হবেন।
এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন মোদী। এরপরে তিনি বলেন, “সংসদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনে কৃষি, কলকারখানা ও স্বাস্থ্য নিয়ে কয়েকটি বিল পাশ হয়েছে। তাতে কৃষক, শ্রমিক, তরুণ, নারী, সকলেই উপকৃত হবেন। এখন সারা দেশ দেখছে, কীভাবে কিছু লোক স্রেফ বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করছে।” ট্র্যাক্টর পোড়ানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কৃষকরা যে যন্ত্রগুলিকে পুজো করেন, সেগুলি পুড়িয়ে বিরোধীরা তাঁদের অপমান করছেন।”
মোদীর অভিযোগ, কৃষি আইনের বিরোধীরা শস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছেন। তাঁর কথায়, “চাষিরা অবশ্যই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাবেন। সেই সঙ্গে তাঁরা উৎপাদিত শস্য যে কোনও জায়গায় বেচতে পারবেন। এর মাধ্যমে অনেকের কালো টাকার আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে।”
কৃষি বিল নিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই তীব্র বিরোধিতার মধ্যে পড়তে হয় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটাভুটির রাস্তায় না গিয়ে সরকার গায়ের জোরে বিল পাশ করিয়েছে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে সই না করার আবেদন জানানো হয়। তাঁদের দাবি ছিল, ওই বিল পুনর্বিবেচনার জন্য ফের.সংসদে আনা হোক।
কেন্দ্রের বক্তব্য এই বিল কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করবে। তা ছাড়া একবিংশ শতকে কৃষি ব্যবস্থায় অনেক বদল এসেছে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এই বিল প্রস্তুত করা হয়েছিল। উৎপাদনেও ইতিবাচক বদল হবে বলে মত বিজেপির।
পাল্টা বিরোধীদের বক্তব্য, কৃষকদের মারার জন্য এই বিল আনা হয়েছে। বিজেপির আসল লক্ষ্য, দেশের কৃষি ক্ষেত্রকে কর্পোরেট পুঁজির কাছে বেচে দেওয়া। তাঁদের আরও বক্তব্য, কৃষকদের মৌলিক মানোন্নয়ন নয়, গেরুয়া শিবির মূল লক্ষ্য কয়েক জন পুঁজিপতির মুনাফা ও সম্পদ আরও বাড়িয়ে দেওয়া।
এই বিলের বিরুদ্ধে একশোর বেশি কৃষক সংগঠন রাস্তায় নেমেছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, কেরল, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যে উত্তাল বিক্ষোভ হয়েছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর। আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিরোধীরা। তা ছাড়া কৃষি বিলের প্রতিবাদে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে শিরোমনি আকালি দল। এই পরিস্থিতিতেই রবিবার কৃষি বিলে সই করে দিয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ।