তৃণমূলের সভা সমিতিতে বাংলা সিনে মিডিয়ার তারকাদের উপস্থিতি একেবারে অবধারিত ছিল।বিষয়টা কখোন কখোন এমন পর্যায় চলে যেত যে তৃণমূলের কোন অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক সভার চেয়ে জলসা বলে অনেকে ভুল করতেন।শুধু মাত্র বাঁধা মঞ্চের অনুষ্ঠানেই নয় শাসক দলের রোড শো তেও তারকাদের হাঁটতে বাধ্য করা হত বলে টলি পাড়ার অন্দর মোহলের খবর।শাসক দলের সভা ও অনুষ্ঠানে তারকাদের উপস্থিতির উপরেই নাকি নির্ভর করত তাঁদের কাজ পাওয়া বা না পাওয়ার বিষয়টা।এই মাপকাঠিতেই নাকি অনেক ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রী দিনের পর দিন কাজ না পেয়ে বসে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রকাশ্যে শাসক দলের প্রতি আনুগত্য না দেখালে নাকি এরাজ্যে অভিনয় জগতে টিঁকে থাকা সম্ভব নয়।শাসক দলের পক্ষে টলি পাড়ার নিয়্ন্ত্রক হিসেবে মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য বলে অনেকেরই মত,তিনি তাঁর ভাই স্বরুপ বিশ্বাসকে দিয়ে সিনে পাড়া শাসন করেন বলেই সবাই জানে।তাঁর মাধ্যমেই বিধানসভা বা লোকসভার ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় কেকে থাকবেন তা বিবেচনা করা হয় বলে খবর।মোদ্দা কথা তৃণমূলের একতরফা খবরদারিতে টালিগঞ্জের সিনেমা পাড়ায় অনেকের মধ্যেই বেশ কিছুদিন ধরে ক্ষোভের সঞ্চার হতে শুরু করে।
সেই সূত্রেই বেশ কিছু অভিনেতা ইতিমধ্যেই বিজেপির খাতায় নাম লিখিয়েছেন।প্রসঙ্গত রূপা গাঙ্গুলি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়রাও অভিনয় জগত থেকেই বিজেপির রাজনীতিতে আসেন,এর মধ্যে লকেটতো আবার কিছুদিন তৃণমূলেও কাটিয়ে এসেছেন।
সেখানে প্রসেনজিত স্পষ্টতই রাজ্যের শাসক দল যে ভাবে শিল্পীদের স্বাধীন কাজ কর্মে হস্তক্ষেপ করছে তা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন।তিনি এটাও নাকি বলেন বলে শোনা যাচ্ছে,যে শাসক দল অভিনেতাদের ও কলাকুশলীদের পাওনা গন্ডা পেতেও নানা ভাবে বাঁধা দেয়।আর্টিস্ট ফোরামের অন্যতম কর্তা হওয়ায় প্রসেনজিতকে এ বিষয়ে যথেষ্ট অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয় বলেও নাকি প্রসেনজিত মুকুল রায়কে জানান।সব শুনে মুকুল রায়ের পরামর্শ শাসক দলের একাধিপত্যকে একেবারে ভেঙে দিতে হবে,আর তার নেতৃত্বে থাকতে হবে প্রসেনজিতকেই।
প্রসেনজিত বিষয়টি নিয়ে কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও তিনি বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন বলেই খবর।প্রসেনজিতের পক্ষে আর একটা কারণে এই মুহুর্তে মুকুল রায়ের কথা একেবারে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয় তা হল,রোজভ্যালি কান্ডে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছে সিবিআই ও ইডি।সুকুল রায়ের কাছ থেকে এ বিষয়েও প্রসেনজিত পরামর্শ চান বলে খবর।মুকুল রায় এ ব্যাপারে প্রসেনজিতকে কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে,তিনি নিজেও প্রসেনজিতকে এ বিষয় সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেই খবর।
প্রসেনজিত নিজে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি নয়,তবে তিনি মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন,জানাচ্ছেন একান্ত সৌজন্যমূলক সাক্ষাতকার তার চেয়ে বেশী কিছু নয়।তবে সেই সাক্ষতের সৌজন্য যে তৃমমূলের বুকে ভয়ের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা বলাই বাহুল্য।এখন দেখান বাংলা সিনেমার কোন কোন রথি মহারথিরা প্রসেনজিতের হাত ধরে বিজেপিতে গিয়ে ভেড়েন।