দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে চিনের হামলার পরে এদিন প্রথম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেখান থেকে বার্তা দিলেন চিনকে। একই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন ভারতের বিদেশ নীতি। এদিন মোদী বলেন, ভারত যেমন বন্ধুত্ব করতে জানে তেমনই চোখে চোখ রেখে কথা বলতেও জানে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বছরের শুরু থেকেই একের পর এক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। প্রথমত করোনার সঙ্গে এতদিন লড়াই করতে হবে, এত বড় সমস্যা হবে তা ছ’মাস আগেও পর্যন্ত জানাই ছিল না। সেই লড়াইয়ের মধ্যে পূর্ব ভারতে উমফান ঘূর্ণিঝড়, পশ্চিম ভারতে নিসর্গ ঘূর্ণিঝড় এসেছে। পঙ্গপাল নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আগ্রাসন। এই প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কেমন করে বন্ধুত্ব করতে হয় সেটা ভারত জানে। আবার চোখে চোখ রেখে উচিত জবাব দিতেও জানে। আমাদের বীর সৈনিকরা দেখিয়ে দিয়েছেন মা ভারতীর গৌরবে খারাপ চোখে কোনও আঁচ আসতে দেবেন না তাঁরা।”

এখানেই থামেননি মোদী। তিনি সরাসরি লাদাখ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “ভারত তার সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে কতটা বদ্ধপরিকর তা গোটা বিশ্ব দেখেছে। লাদাখ সীমান্তে যারা আমাদের জমিতে আসার চেষ্টা করেছে তাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন জওয়ানরা।”

পূর্ব লাদাখে চিন-ভারত সংঘর্ষের পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তাপ চলছে। এনিয়ে সর্বদল বৈঠক করেও সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার দেশবাসীর সামনেও সেই বিষয়ে কথা বললেন। এদিন মোদী বলেন, ভারতে বিভিন্ন সময় হামলা ও আক্রমণ হয়েছে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ সঙ্গে নিয়ে তা অতিক্রম করেই ভারত এগিয়েছে। দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি এগিয়েছে। তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষী যে, সংকটই ভারতের সাফল্যের সিঁড়ি। এখনও সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।

মোদী বলেন, গোটা বিশ্বে শান্তি স্থাপনের জন্যই ভারতকে মজবুত হতে হবে। আত্মনির্ভর ও শক্তিশালী হতে হবে। স্বাধীনতার পরে আমরা এই ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে গেছি। আমাদের অনেক অস্ত্র কারখানা ছিল। এখন আবার দেশকে আত্মনির্ভর হতে হবে। লোকালের জন্য ভোকাল হতে হবে। আর এর জন্য এগিয়ে আসতে হবে গোটা দেশকে। সব নাগরিককে।

প্রধানমন্ত্রী এদিন লাদাখে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করে বলেন, ‘প্রতিবেশীদের আচরণ আমরা দেখেছি। তা প্রতিরোধও করেছি।’ লাদাখে শহিদদের পরিবারের মনোবল এখনও চাঙ্গা। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বাকি সন্তান ও পৌত্রদেরও যুদ্ধে পাঠানোর জন্য অঙ্গীকার করছেন। এটাই ভারত। শহিদ পরিবারের এই সংকল্পকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে বলে দাবি করেছেন মোদী। তিনি বলেন সীমানা রক্ষায় শক্তিশালী হতে হবে ভারতকে। আর সেকারণে আত্মনির্ভরতাও বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ভারত এখন আত্মনির্ভরতার দিকে যাচ্ছে। এজন্য গোটা দেশের সমস্ত নাগরিককে একজোট হতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here