বেহালা পঞ্চাননতলা প্রথম মহিলা পরিচালিত পুজোয় মণ্ডপ সজ্জায় চমক দিল আল্পনায়

0
1003

পিয়ালী মুখার্জী, বেহালা: একটা সময় ছিল যখন আমাদের মা-মাসিরা চালেরগুঁড়ো দিয়ে সুন্দর করে আল্পনা তৈরি করতেন। অনেক সময় ধরে অসীম ধৈর্যসহকারে আঙুলের পরশে আঁকতেন নান্দনিক আল্পনা।

গৃহসজ্জায় সৌন্দর্য আর নৈপুণ্য আনায়নে সেই আল্পনা এক প্রকারের প্রাচীন সনাতনী রীতি। যা ঘরগেরস্থালির মাঙ্গলিক নানা কাজের ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

তবে কালের বিবর্তনে সেই চালেরগুঁড়োর আল্পনা আজ হারিয়েই গেছে। এখানে সংযোজন ঘটেছে আধুনিক পদ্ধতির উপকরণ।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে চালেরগুঁড়োর পরিবর্তে রং-তুলির এই সংমিশ্রণ আল্পনার চাহিদাকে পূরণ করে চলেছে। আর সেই প্রাচীন চালেরগুঁড়োর আল্পনা ঠাঁই নিয়েছে স্মৃতির কোঠায়।

সেই হারিয়ে যাওয়া আল্পনাকে অস্ত্র করেই এ বছর বেহালা পঞ্চাননতলা দুর্গোৎসব কমিটির প্রথম মহিলা পরিচালিত পুজোর উদ্যোক্তরা নিজেরাই মন্ডপ সাজালেন আল্পনা দিয়ে৷ যা নজর কেড়েছে গোটা বেহালার ৷

বেহালা পঞ্চাননতলা দুর্গোৎসব কমিটির প্রথম মহিলা পরিচালিত পুজোর উদ্বোধন করেন বেহালা পশ্চিমের মহিলা বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় । রত্না দেবী ছারাও উপস্থিত ছিলেন বেহালার বাসিন্দা বিশিষ্ঠ আইনজীবী গোপাল হালদার। সোমবার সন্ধ্যায় ফিতে কেটে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে এই মহিলা পরিচালিত পুজোর উদ্বোধন হয়।

পুজো মণ্ডপে ঢুকে রত্না চট্টোপাধ্যাযের প্রতিক্রিয়া সকল পল্লীবাসীর মন কেড়ে নেয়। বিশেষ করে অঞ্চলের যে মহিলারা পুজোর সাথে জড়িত তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। প্রতিমা, মণ্ডপ সজ্জা বিশেষ করে আল্পনা রত্না দেবীর বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আলপনা শিল্পী কৃষ্ণ ব্যানার্জী কে তার কৃতিত্বের জন্য আলাদা করে প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন “এটা কোনো পাড়ার পুজো মণ্ডপ বলে মনে হচ্ছে না, কোনো জমিদার বাড়ির সাবেকি পুজো মণ্ডপে ঢুকে পরেছি। মহিলাদের শৈল্পিক সৌন্দর্য বোধ পুরুষ দের থেকে বেশি টা প্রতিমা মণ্ডপ দেখেই বোঝা যায়। এতো সুন্দর মণ্ডপ সজ্জা আল্পনা আগে কখনো পাড়ার পুরুষ পরিচালিত পুজোয় দেখিনি” তার কথায় সকলে উচ্ছসিত হয়ে পড়েন। তিনি কথা দিয়ে যান আগামী তিন দিনের যে কোনো এক দিন তিনি আসবেন পাড়ার মহিলাদের সাথে আড্ডা দিতে, ভোগ খাবেন। কিছুটা সময় সকলের সাথে মণ্ডপে কাটিয়ে যাবেন।

আলপনা শিল্পী কৃষ্ণা ব্যানার্জীর কথায় কালের বিবর্তনে সেই চালের গুঁড়োর আল্পনা আজ হারিয়েই গেছে বলা যায়, ফের নারী শক্তিকে তুলে ধরতেই মহিলাদের হাতে গ্রামবাংলার এই শিল্পকে বাঁচানোর চেষ্টায় আমাদের এই উদ্যোগ।

রত্না চট্টোপাধ্যায়, গোপাল হালদার সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি দের এদিন সংবর্ধনা জানায় পুজোর মহিলা কমিটি। সাথে সংবর্ধনা দেওয়া হয় গত পুজোর বিশিষ্ঠ পুরুষ সদস্যদের ও। এই পুজো ৭৭ তম বর্ষে পদার্পন করলো। সাবেকি একচালার সুন্দর প্রতিমা ও মানানসই সাজসজ্জা সত্যিই নজর কারছে দর্শনার্থী ভিড় দেখেই টা বোঝা যায়।

Previous articleবিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানে নির্বাচিত বনগাঁর আয়রণগেট, প্রতাপগড়, গোবরডাঙার গড়পাড়া
Next articleনাতির সঙ্গে দুর্গাদর্শন: অশোক মজুমদার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here