দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ
তখন সবে দিল্লির বিধানসভা ভোটের ফলাফলের ট্রেন্ড আসতে শুরু করেছে। বাঁকুড়া যাওয়ার সময়ে হেলিকপ্টারে ওঠার আগে বিজেপির বিরুদ্ধে একপ্রস্থ আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মিসভার মঞ্চে যখন দিদি পৌঁছলেন, তখন মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে দিল্লিতে ধুয়েমুছে সাফ বিজেপি। আর সেই মঞ্চ থেকে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বলেন, “বিজেপি ভোকাট্টা হয়ে গিয়েছে। একেবারে ভরাডুবি। ওরা স্টেটলেস হয়ে যাচ্ছে।” তাঁর কথায়, “যত জায়গায় নির্বাচন হয়েছে, সব জায়গায় ধপাস ধুম। কোন স্টেট আছে আর? ওই তো ইউপি আর কর্ণাটক। আগামী দিন সেটাও থাকবে না!” এখানেই থামেননি তিনি। গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “একুশের জন্য তৈরি হোন।”
বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে এদিন সভা ডেকেছিল তৃণমূল। লোকসভা ভোটে রাঢ় বাংলার অন্যান্য জেলার মতো এই জেলার দুটি আসনেও হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর আসন দখল করেছে বিজেপি। তারপর সাংগঠনিক দায়িত্ব বদল করে সারা পশ্চিমাঞ্চলের ভার দিদি তুলে দেন রাজ্যের পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে। এদিনের এই সভার পুরোধা ছিলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা-ই।
এক যোগে সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে আক্রমণ শানান তৃণমূলনেত্রী। লোকসভা ভোটে বামেদের ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়া নিয়েও তোপ দাগেন তিনি। বলেন, “সিপিএম টাকা নিয়ে এ ভাবে নিজের সাইনবোর্ডটা বিজেপির কাছে বেচে দেবে ভাবতেও পারিনি।” তাঁর কথায়, “সকালে সিপিএম জগাই, বিকেলে কংগ্রেস মাধাই, রাত্রিবেলা বিজেপি গদাই। এদের কাউকে বিশ্বাস করবেন না।”
বাম জমানার শেষ ক’বছর জঙ্গলমহলে যে ভাবে মাওবাদী উপদ্রব বেড়েছিল, এদিন সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বাঁকুড়ার জনগনের উদ্দেশে দিদির সতর্কবাণী, “তৃণমূল দুর্বল হলে মাওবাদীরা আবার হাত বাড়াবে। ভাত কেড়ে নেবে।” এদিন দিল্লিতে বিজেপির হারে যারপরনাই উল্লসিত মমতা। ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও। বাঁকুড়ার মঞ্চ থেকে সে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অরবিন্দকে ফোন করে বললাম, বাংলার মানুষের পক্ষ থেকে অভিনন্দন।”
যদিও বাংলার বিজেপি নেতাদের বক্তব্য বাঁকুড়ায় দাঁড়িয়ে দিদিমণি যতই দিল্লি নিয়ে কথা বলুন মানুষ শুনবে না। কারণ সারেঙ্গা থেকে বরজোড়া, কোতলপুর থেকে ছাতনার মানুষ দেখেছে দিদির ভাইরা বিধবা ভাতা দিতে গিয়েও কাটমানি খেয়েছে। ফলে একুশের জন্য উনি আগে প্রস্তুত হোন।
ছবি: এআইটিএমসি টুইটার।