নীলাদ্রি ভৌমিক, বারাসত আগামী ১৯ জানুয়ারি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের জনভিত্তিকে পরখ করে নিতে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গাউন্ডে রাজনৈতিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে। আক্ষরিক অর্থে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জনসভাকে সর্বভারতীয় রূপ দিতে, আহ্বান জানিয়েছেন, দেশের সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে। ইতি মধ্যে এ ব্যাপারে সিংহভাগ বিরোধী দল সভায় উপস্থিত থাকার ব্যাপারে সম্মতিও জানিয়েছে৷ ব্রিগেড সভাকে ঐতিহাসিক রূপ দিতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের শীর্ষস্তরের নেতাদের মধ্যে কমিটি গঠন করে ,কাজের দায়িত্বও বন্টন করে দিয়েছেন। রাজ্যের উৎসবের রেশ কাটতেই, এবার ব্লক স্তর থেকে সমাবেশের প্রচার কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন জেলার তৃণমূল কর্মীরা। সেই সূত্র ধরে রাজ্যের সবচেয়ে বড় জেলা উত্তর ২৪ পরগনাতেও শুরু হয়ে গেছে জোরকদমে ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার আন্দোলন। দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সম্প্রতি মধ্যমগ্রামের জেলা দফতরে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে সভা সফল করতে সভাও করেছেন। জেলার পর্যবেক্ষক প্রবীণ নেতা নির্মল ঘোষকে চেয়ারম্যান করে একটি শক্তিশালী কমিটিও গঠন করে দিয়েছেন। এদের নেতৃত্বে প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় তিনটি করে তোড়ণ নির্মাণ,বুথে বুথে দেওয়াল লিখনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দলের কর্মীরা। জেলার পাঁচটি মহকুমাতে ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার ও কর্মীসভাও শুরু করে দিয়েছে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। বসিরহাট ২ নম্বর ব্লকের খোলাপোতা, মাটিয়া, ধান্যকুড়িয়া, কচুয়া, শিকড়া- কুলীন গ্রাম অঞ্চলে সভা করেছেন, ব্লক সভাপতি সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে স্থানীয় কর্মী-সমর্থকরা। এই সভাগুলিতে বক্তব্য রাখছেন, প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আব্দুল্লা, ব্লক যুব সভাপতি সমীর বাছার, ব্লক মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি লক্ষ্মী বিশ্বাস, খোলাপোতা পঞ্চায়েতের প্রধান তথা অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি অপরেশ মুখোপাধ্যায়, মাটিয়া- শ্রীনগরের প্রধান মোস্তাক আহমেদ, যুব নেতা মিহির ঘোষ, ধান্য কুড়িয়ার উপপ্রধান সুখেন্দু ঘোষ, খোলাপোতা অঞ্চল সভাপতি প্রকাশ রায়, পঞ্চায়েতের দল নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির দল নেতা সোমেন মন্ডল , জাতীয় শিক্ষক প্রবীণ তৃণমূল নেতা হাজি আবু ছালেক আহমেদ প্রমুখ। বনগাঁ মহকুমার বনগাঁয় প্রচারে নেমেছেন বিধায়করা ছাড়াও প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁ শহর যুব সভাপতি তথা ছয়ঘড়িয়ার পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিত ঘোষ, প্রাক্তন পৌরপ্রধান মহিলা নেত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য সহ নেতৃবৃন্দ। গাইঘাটা জুড়েও প্রচার শুরু করে দিয়েছেন দলের কর্মী- সমর্থকরা । বারাসতে সাংসদ ডা. কাকলি ঘোষদস্তিদার নিজে ব্রিগেড প্রচারের দেওয়াল লিখনে পথে নেমেছেন। হাবড়া,অশোকনগর, মধ্যমগ্রাম, বিধাননগর, বাবারকপুর, বাগুইআটি, দমদম, বিরাটি, দেগঙ্গা, বাদুড়িয়া, বসিরহাটের হাসনাবাদ, হাড়োয়া সহ পুর এলাকায় জোর উদ্দীপনার সঙ্গে দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি ছোট ছোট কর্মী সভা শুরু হয়েছে। এই প্রথম তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উদ্যোগে জেলার ৩৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের যুবক-যুবতীদের নিয়ে রাজ্যের উন্নয়ন ও কেন্দ্রের বাধা শীর্ষক বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার সেরাদের এবার ব্রিগেডের জনসভার প্রচারে লাগানো হবে বলে জানান, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ১৯ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতে এই জেলা থেকে অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ভেঙে দিয়ে মানুষ হাজির হবেন ব্রিগেডে৷ কারন, এই সভায় দেশের বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই মহতী জনসভা আগামী লোকসভা নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করে দেবে।যার কান্ডারী স্বয়ং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।