পার্থ সারথি নন্দী, পেট্রাপোল: ভারতীয় নাগরিক হয়েও বাংলাদেশের বাওড় আর ভারতের নদী পার হয়ে ভোট দিতে আসতে হল কলেজ পড়ুয়া পৃথা হালদারকে। শুনতে অবাক লাগলেও পৃথাদের মতো বাংলাদেশ লাগোয়া শেষ ভারতীয় ভুখন্ড ১৩ ঘরের বাসিন্দাদের জীবনের এটাই রোজনামচা।
এবছর প্রথম ভোট দিলেন পৃথা। বনগাঁ দীনবন্ধু মহা বিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী পৃথাকে কলেজে যেতে হলেও যেভাবে বিএসএফের উপর নির্ভর করে থাকতে হয়, ভোটদানের দিনও একই অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হতে হল তাঁকে।
নৌকায় প্রথমে বাংলাদেশের বাওড় এবং তারপর ভারতের নাওভাঙা নদী পেরিয়ে ঘাটে নামতেই বিএসএফের একপ্রস্থ তল্লাশি। ফেরার পথেও একই কান্ড। এটা নিত্যদিনের ঘটনা। মহিলাদের ক্ষেত্রে মহিলা বিএসএফ জওয়ান সেই সময় উপস্থিত না থাকলে তারজন্য অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। জীবনের প্রথমবার পিরোজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিয়ে ফেরার পথে সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হতে হল পৃথাকে।
১৩ ঘরের বাসিন্দা পেশায় মৎস্যজীবী দুলাল হালদার তাঁর অঞ্চলের বাসিন্দাদের নৌকা করে নদীর ঘাটে পৌছে দিয়ে নিজেও ভোট দিতে গেলেন। তিনি জানালেন, ভোট আসে, ভোট যায়। আমরাও নেশার মতো নিজের অধিকার প্রয়োগ করতে প্রতিবার ভোট দিই। কিন্তু আমাদের জীবনের হাল আর ফেরে না। তবে তারমধ্যেও সুখের কথা এই যে, অনেক আবেদন, নিবেদনের পর ১৩ ঘরে বিদ্যুৎ এসেছে। পানীয় জলের কল বসলেও সেখানে জল মেলে না। তাদের দাবি, যেন জলের ব্যবস্থা করা হয়।
বাজার থেকে চিকিৎসা, পড়াশোনা থেকে বেড়াতে যাওয়া। ১৩ ঘরের বাসিন্দাদের এভাবেই বাওড়, নদী, বিএসেফের চোখ রাঙানী সহ্য করেই দিনযাপন করতে হচ্ছে। ভোট তো দিচ্ছেন, জীবনের হাল কি কখনও ফিরবে ? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য জানা নেই এখানকার বাসিন্দাদের।