অর্পিতা দে
পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা মধ্যপ্রদেশের ধর জেলার দুর্গ শহর মান্ডু. দুর্গ হলেও এর প্রতিটা পাথরে আজও শোনা যায় রুপমতির নুপুরের শব্দ, বিন্ধের হাওয়ায় ভেসে বেড়ায় তার গান, যা একসময় রাজপুতদের শেষ স্বাধীন রাজা বাজবাহাদুরকে মুগ্ধ করেছিল।
রূপ্মতির রূপে আর গানে মুগ্ধ হয়ে এই রাজপুত কবি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং নিয়ে আসেন এই মান্ডুতে,রানী রুপমতির জন্য তৈরী হয় রুপমতি পাভিলীয়ন এবং রেওয়া কুন্ড.
ইন্দোর থেকে ৯৮ কি.মি. দুরত্বে অবস্থিত প্রাচীন ধংসপ্রাপ্ত দূর্গটি যেন সারা শহরটাকেই ঘিরে রেখেছে কোনো এক ভালবাসার মায়াবী আস্তরনে৷আর প্রকৃতিও কার্পন্য করেনি তার অপার রূপের মহিমায় একে সাজাতে৷
প্রায় তিনহাজার বছর পুরানো এই দূর্গের পাথরে কান পাতলে শোনা যায় সেইসমস্ত শাসকদের ইতিহাস যাঁরা কখনো এর নামকরণ করেছিলেন ‘আনন্দ নগরী’ আবার কখনো ‘মাল্বয়া’৷
মান্ডু ফোর্টে প্রবেশ করতে হলে পেরোতে হয় ১২টা দরজা,দূর্গের ভিতরে আছে জাহাজ মহল, হিন্দোলা মহল, হোসেন শাহ টম্ব, জামা মসজিদ, রেওয়া কুন্ড, বাজ বাহাদুর প্যালেস, রুপমতি পাভিলীয়ন৷
জাহাজ মহল অথবা রুপমতি পাভিলীয়ন এদের প্রত্যেকেরই আছে একটা নিজস্ব গল্প তাই সম্পূর্ণ দুর্গটা ঘুরে দেখতে হলে থাকতে হবে এখানে একটা দিন৷
দুর্গের ভিতরে আছে MPTDC-র বাংলো. ভাড়া ৮০০-১৫০০ টাকা. আগে থেকে বুক করে যাওয়াই ভালো. দুর্গের বাইরেও অনেক হোটেল ও রিসর্ট আছে৷
মান্ডুকে পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে এখানে একটা রাত কাটাতেই হয়,রাতের অন্ধকারে পাহাড়ের কোল থেকে ভেসে আসে কোনো আদিবাসী গান ও বাঁশির সুর, শোনা যায় রানী রুপমতির পরিবারের লোকজনেরা আজও এই মান্ডু শহরেই থাকেন৷
মান্ডু আসতে হলে হাওরা থেকে শিপ্রা এক্সপ্রেসে ইন্দোর, সেখানে একটা দিন কাটিয়ে পরেরদিন ভোরে রওনা দিতে পারেন মান্ডু,যেকোনো টুরিস্ট বাস অথবা প্রাইভেট কারে মান্ডু আসা যায়, থাকতে হলে গাড়ি ভারা করে আসাটাই ভালো৷
টুরিস্ট বাসের ভাড়া এসি ৭০০-৮০০টাকা নন-এসি ৪০০-৫০০টাকা. প্রাইভেট কার ২০০০ টাকা থেকে শুরু,
মান্ডুতে আসার সময় জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারী, তবে বর্ষায় মান্ডুর রূপ হয়ে ওঠে অনন্য, রোদে আর মেঘের আড়ালে দুর্গের প্রাচীনত্ব যেন আরো প্রকট হয়ে ওঠে৷ ছবি- লেখক।