প্রেসক্রিপশন ,আলু,ডিম, মিষ্টিকে ‘ঢাল’ বানিয়ে বাংলার রাস্তায় রাস্তায় অবাধে ঘুরছে বাইক আরোহীরা, ধরপাকড়ে ব্যাস্ত ‘নাকা’র পুলিশ

0
1859

দেশের সময় বনগাঁ: কারো হাতে তাঁর বাবার অসুস্থতার নিদর্শন দেখানো পুরোনো প্রেসক্রিপশন,কারো হাতে পুরোনো এক্সরে প্লেট, আবার বেশ কিছু শহরবাসী কখনও ডিমের ট্রে, আলু, পিঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কখনওবা মিষ্টির বাক্সকে ‘ঢাল’ করে লকডাউন ভেঙে শহরের রাস্তায় ঘুরতে বের হচ্ছেন বাইক নিয়ে। এমন অভিযোগ উঠেছে পুলিশের পক্ষ থেকেই।

কখনও ভর দুপুরে এক কিলো আলু সাথে পিঁয়াজ হাতে কখনও বা সন্ধ্যেবেলা পাঁচশো পটল কিনতে লকডাউন ভেঙে বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ জিজ্ঞাসা করতেই তুরন্ত জবাব, প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাজারে এসেছি। কিন্তু পুলিশের পাল্টা প্রশ্নে থতমত খেয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। এক কিলো আলু বা পিঁয়াজ কিনতে কেন বাইক নিয়ে বের হওয়া? কেনই বা বাজারে যাওয়া, সেই উত্তর আর দিতে পারছেন না আরোহীরা। কেউ বা আবার চাঁদিফাটা রোদে ছোট্ট একটা মিষ্টির বাক্স নিয়ে পুলিশের সামনে তুলে ধরে বিনয়ের হাসি হেসে খুব আস্তে আস্তে বলছেন বাড়িতে লক্ষী আছে, রাস্তায় পার হয়ে যাচ্ছেন হেলতে দুলতে।

এভাবে দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে মিষ্টি কেনার অজুহাতে বের হচ্ছেন অনেকেই। তবে যে দোকান থেকে মিষ্টি কেনার দাবি আর যেখান থেকে বাইক বা স্কুটার ধরা পড়ছে, তার মধ্যে কোনও সামঞ্জস্য পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জেরার পর কয়েকজন স্বীকারও করেছেন যে, তাঁরা শুধুই ঘুরতে অথবা কোনও বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছেন। একইভাবে বড় রাস্তায় না হলেও বিভিন্ন এলাকার ভিতরের রাস্তাগুলিতে বহু এলাকার বাসিন্দাই ইচ্ছামতো লকডাউন ভেঙে বাইক নিয়ে ঘুরছেন, এমন অভিযোগও পুলিশের কাছে এসেছে। তবু অকারণে যাতে কেউ রাস্তায় ঘোরাঘুরি না করেন, তার জন্য পুলিশ কড়া হয়েছে।

মঙ্গলবার লকডাউন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৬৬৯জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে ৯৮টি গাড়ি।এদিকে, সারাদিন নাকা চেকিংয়ের পর যাতে পুলিশকর্মীরা খাবার পান, তার জন্য নাকাগুলিতেই মূলত যাচ্ছে লালবাজারের মোবাইল ক্যান্টিন। আপাতত থেকে ৭০-৮০টি স্ন্যাকসের প্যাকেট বিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশকর্মীদের কাছে।

এই প্যাকেটে থাকছে খাস্তা কচুরি, চানাচুরের মতো শুকনো খাবার, যা খেয়ে পেট ভরতে পারে একজনের। এ ছাড়াও থাকছে চা আর বিস্কুট। লকডাউনে খাবার ও চায়ের দোকান বন্ধ বলে রাস্তায় ডিউটিরত পুলিশকর্মীরা অপেক্ষা করে থাকছেন এই মোবাইল ক্যান্টিনের জন্য। চা ও খাবারের সঙ্গে থাকছে বোতলভর্তি মিনারেল ওয়াটার। যদিও জল বিনামূল্যেই দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার সকালে বনগাঁর রাস্তায় জনসমাগম দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এখনও লকডাউন চলছে৷ এক পথচারীর কথায় পেট শুনছে না, সেখানে লকডাউন হয়নি৷ দেখুন ছবি

ছবিগুলি তুলেছেন – সোমা দেবনাথ।

Previous articleYour Shot 📷 Super Moon
Next articleজ্বলছে শুশুনিয়া, তারই মধ্যে দু’বার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাঁকুড়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here