পেটোয়া অফিসারদের দিয়ে ভোট করাতে চাইছে তৃণমূল সরকার, নির্বাচন কমিশনে নালিশ মুকুল রায়ের

0
944

দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: বিজেপি-র সংকল্প যাত্রাকে কেন্দ্র রবিবার বিভিন্ন জেলায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। কোথাও তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত হয়েছে। কোথাও পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হয়েছে বিজেপি কর্মীদের। তার পর চব্বিশ ঘণ্টা না কাটতেই সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করলেন মুকুল রায়, শমীক ভট্টাচার্য সহ বিজেপি নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, বাংলায় নির্বাচন করানোর মতো পরিস্থিতি নেই। তাই দরকার হলে বাংলায় ভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক। সব রাজ্যে লোকসভা ভোট হয়ে যাওয়ার পর ভিন রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের এনে ভোট হোক বাংলায়।

বাংলার নির্বাচনে যখন বাম সন্ত্রাস ছিল চরমে, তখন বার বার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে বিহিত ব্যবস্থার দাবি জানাতেন মুকুলবাবু। কমিশনের নিয়ম কানুন তিনি যে গুলে খেয়েছেন তা তৃণমূলের নেতারাও ভালমতো জানেন। এমনকি ঘটনা হল, কমিশনের ব্যাপারে একমাত্র তাঁর উপরেই ভরসা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তিনি বলেন, ভোটের আগে যে অফিসারদের নিয়মমাফিক বদল করছে কমিশন, তাঁদের ব্যকডোর দিয়ে ফিরিয়ে আনছে রাজ্য সরকার। জেলার এসপি-কে বদল করে সেই জেলাতেই এসপি সিআইডি করে দেওয়া হচ্ছে। আবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে যিনি ছিলেন তাঁকে সরিয়ে এসটিএফের মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসটিএফ তো কলকাতা পুলিশেরই অধীনে।

এখানেই থামেননি মুকুলবাবু। তিনি বলেন, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের মাথায় বসানো হয়েছে। মানে ভোটের সময় কেউ যদি তৃণমূলকে চাঁদা দেয় অসুবিধা নেই, বিজেপি-কে চাঁদা দিলেই গ্রেফতার করা হবে। শুধু তা নয়, যে অফিসারদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্ত এজেন্সির সামনে হাজিরা দিতে হচ্ছে, যাঁদের তৃণমূলের ধর্ণায় বসতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের দিয়েই ভোট করাতে চাইছে বাংলার সরকার।

রাজনীতিতে এ এক অদ্ভূত পরিস্থিতি যখন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তথা তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই এখন কমিশনে নালিশ জানাচ্ছেন অধুনা বিজেপি-র নেতা মুকুলবাবু।

বিজেপি নেতৃত্ব এ দিন কমিশনকে বলেন, এই প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বাংলায় কোনও ভাবেই সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করানো সম্ভব নয়। এ ভাবে বাংলায় ভোট করালে বিজেপি মানবে না। কমিশন যদি লিখে দেয়, বলে যে আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, বাংলার কোনও পুলিশ অফিসার ভোটের দায়িত্বে থাকবে না তবেই ভোট হতে পারে।

বিজেপি-র এই দাবি নিয়ে তৃণমূল এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, কমিশনের উপর আগে থেকেই চাপ বাড়িয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। তাঁদের মূল লক্ষ্য হল, কমিশনের কাছে এমন একটা ধারনা তৈরি করা যে রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনকে দিয়ে বাংলায় অবাধ ভোট হবে না। যাতে ভোট ঘোষণার পর কিছু আইএএস এবং আইপিএস কর্তাকে বদলি করে বা ছুটিতে পাঠায় কমিশন।

প্রসঙ্গত, বাংলায় নির্বাচনী সন্ত্রাসের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিতস শাহ অনেক দিন ধরেই সরব। পঞ্চায়েত ভোটের পর রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনার বিবরণ ও ছবি তাঁদের নির্দেশেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে পেশ করেছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। তা ছাড়া কিছুদিন আগে কমিশনের ফুল বেঞ্চ যখন কলকাতায় বৈঠক করতে এসেছিল, তখনও মুকুল রায়রা তাঁদের বলেছিলেন, বাংলায় বর্তমান প্রশাসনিক অফিসারদের দিয়ে অবাধ ভোট সম্ভব নয়। কমিশন যেন বাংলায় ভোটের সময় বিশেশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে। বিজেপি-র সংকল্প যাত্রায় বাধা দেওয়ার ঘটনা ও রাজনৈতিক ঘটনায় দলের কর্মীদের আহত হওয়ার বিষয়টিও এ দিন সিইও-কে জানান বিজেপি নেতারা। এখন অপেক্ষা করতে হবে এ ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের কাছে কী রিপোর্ট পাঠায়

Previous articleশিবরাত্রী পালন কি শুধু শিবরূপী বরের আশায়? জানতে পড়ুন
Next articleহাবড়ায় মাছ ধরতে গিয়ে ,জলে ডুবে মৃত্যু হল এক বেক্তির

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here