পুজোর সময়: বেড়ানো সেই সঙ্গেই   অফিসের কাজ কীভাবে করবেন?

জয়দীপ রায়: 

করোনা আবহে ভ্রমণের পরিভাষাও বদলে গিয়েছে অনেকখানি। ওয়ার্ক ফ্রম হোম আর ওয়ার্ক ফর হোমের চাপে বেড়াতে যাওয়ার ফুরসত পাচ্ছেন না অনেকেই। তার মধ্যে আবার করোনার আতঙ্ক! তবে এই আবহে নয়া সেনসেশন ওয়ার্কেশন। এখন আর ভ্যাকেশন নয়। বরং নিউ নর্মাল দুনিয়ায় ট্রাভেলে ইন ওয়ার্কেশন। ভাবছেন এই ওয়ার্কেশন কী? ওয়ার্কেশন হল ওয়ার্ক + ভ্যাকেশন। মানে ঘুরতে গিয়ে কাজ বা কাজ করতে করতে ঘোরা। এমন অদ্ভুত ভাবনার কথা কি আগে কখনও ভাবতে পেরেছিলেন? ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটাই এখন নতুন সেনসেশন। 


পুজোর সময় যদি ওয়ার্কেশনের পরিকল্পনা থাকে। তাহলে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন একনজরে :-

এক. ইলেকট্রিসিটি আর ভাল নেট পরিষেবা। এইদুটো ঠিক থাকলেই ঘুরতে গিয়েও অফিসের কাজ অনায়াসে করতে পারবেন। কয়েকটি হোটেলের মালিকেরা বলছেন, যারা কাজের চাপে ঘুরতে যেতে পারছেন না, তাঁদের কথা মাথায় রেখে হোটেল বা হোম স্টেতে হাই স্পিড নেট পরিষেবা রয়েছে। ফলে কখনও ঘরে বসে, বা পাহাড়ের কোলে কোনও বাগানে বসেও কাজ করতে পারবেন। সারাদিন কাজের পর বিকেলের দিকে ঘুরতেও যেতে পারেন। 


দুই. বিদেশ ভ্রমণ হয়তো এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তাই দেশের মধ্যেই বেড়িয়ে পড়তে পারেন। হিমাচল প্রদেশ, জয়পুর, যোধপুর, উদয়পুর, কুর্গ, মুক্তেশ্বর, মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটকেও শুরু হয়েছে ওয়ার্কেশনের ব্যবস্থা। 

তিন. ওয়ার্কেশনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, নিরাপত্তা। হোটেল কর্তৃপক্ষ সুরক্ষার ব্যাপারেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই জানা যাচ্ছে। করোনা আবহের কথা মাথায় রেখে ঘর, গাড়ি প্রত্যেকটা জায়গাই প্রতিদিন পরিষ্কার করে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে ঘুরতে এসে কেউ অসুস্থ না হয়ে পড়েন। 


চার. সপ্তাহে পাঁচদিন হোটেলে বসে কাজ এবং আশেপাশে ঘুরতে তো যেতে পারবেনই। তাছাড়াও ছুটির দিনে একটু দূরেও ঘোরার সুযোগ থাকছে। বাড়ির চার দেওয়ালের বাইরে কয়েক সপ্তাহ এমন পরিবেশে কাজ করলে নিঃসন্দেহে ফ্রেশ লাগবে। সেই সঙ্গে পুজোটাও জমে যাবে।

-:ট্র্যাভেলগ :-

ইছামতির তীরে মঙ্গলগঞ্জ – নীলকুঠি

মঙ্গলগঞ্জে না গেলে জানা যাবে না, বিভূতিভূষণের ইছামতি এখনও এত সুন্দর! বেশ পরিষ্কার জল। ওপারেই পারমাদন ফরেস্টের ঘন জঙ্গল। ছবি পড়ে থাকে জলে। প্রচুর ছাল ফেটে যাওয়া লাল কান্ডের অর্জুন গাছ। শিশুগাছও আছে কিছু। যেন প্রকান্ড ছাতা মেলে নদীর পরে ঝুঁকে পড়ে ছায়া দিচ্ছে নদীকে। আরও অনেক ছিল শিশুগাছ। মাঝি বলল, দু’হাজারের বন্যায় সব মরে গেছে। জল নেমে যাবার কিছুদিন পরে গাছগুলোর সারা গায়ে ফুটো ফুটো হয়ে গেল। তারপর গাছের গায়ের রক্তের মত আঠা সেই ফুটো দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলো। সব গাছ মরে গেল।


নদী এতসব গল্প শুনতে শুনতে আরও গভীর জঙ্গলের পথে এঁকেবেঁকে চলে যায়। মাছরাঙা বসে থাকে তাক করে। সূর্য ডুবতে লেগেছে। এরপর যখন অন্ধকারও জঙ্গলের মত ঘন হবে, নদীর পারে জোনাকি ফুটবে হাজার হাজার। পাশেই নীলকর সাহেবদের পোড়ো বাড়ি থেকে ঘোড়া ছুটে বেরোবে। গয়ামেমের আত্মা নাকি এখনও ঘুরে বেড়ায় রাতেরবেলা।


ডে ভিজিটররা সেসব কিছুই জানতে পারবেন না। তারা চা খেয়ে চলে যাবার পরেই এসব শুরু হবে। যারা ব্যাকপাকার্স ক্যাম্পের টেন্টে থেকে যাবেন তাদের কাছেই এত কিছু ধরা দিতে পারে।

কীভাবে যাবেন;- নীলকুঠি ,মঙ্গলগঞ্জ?
বনগাঁ স্টেশন থেকে অটো বা টোটো ভাড়া করে নাটাবেড়িয়া হয়ে মঙ্গলগঞ্জ পোঁছাতে পারেন সহজেই৷ এছাড়া বনগাঁ – চাকদহ রুট হয়ে প্রচুর অটো ,টোটো,বাস যাচ্ছে ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here