দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভোটের মুখে নিচুতলায় দলকে আরও চাঙ্গা করতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জেলার সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন। আর হাওড়ায় এই দায়িত্ব পেয়েছেন ফিরহাদ হাকিমকে। আর এই পরিস্থিতিতেও দলে ভাঙন আটকাতে পারছে না তৃণমূল। দিন কয়েক আগে হাওড়ায় শহর জেলা তৃণমূল সভাপতি ও রাজ্য মন্ত্রিসভার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তারপরই বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তীর মতো নেতারাও দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তবে তাঁরা এখনও তৃণমূলেই আছেন। কিন্তু তৃণমূল ছেড়ে এবার বিজেপির দিকে পা বাড়ালেন হাওড়ার ‘প্রভাবশালী’ নেতা শ্রীকান্ত ঘোষ। এদিন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রীকান্ত। তারপরই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, বুধবারই হবে এই দলবদল প্রক্রিয়া। শুধু শ্রীকান্তই নয়, বিজেপির দাবি তাঁর সঙ্গে আরও ৫০০০ তৃণমূল কর্মীও নাম লেখাবেন গেরুয়া শিবিরে। এদিন মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠকের শেষে শ্রীকান্ত বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে আমি তৃণমূল কংগ্রেস করছি। কিন্তু দলে কোনও সম্মানই পাইনি। আমার টাকায় দলের অনেক বড়-বড় অনুষ্ঠান হয়েছে। আমায় লুটেছে তৃণমূল। কিন্তু সামান্য সম্মানও পাইনি। এই দলে তাই আর থাকব না।’
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীরতন শুক্লা দল ছাড়ার পরই হাওড়াজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। দলের একাধিক নেতা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তার আগে থেকেই অবশ্য রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বিরুদ্ধে একাধিক বার ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। ফিরহাদ অবশ্য হাওড়ার দায়িত্ব পাওয়ার পরই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন। সূত্রের খবর, টেলিফোনে তিনি সরাসরি জানতে চান, দল বা সরকারের কাজকর্ম নিয়ে রাজীবের কোনও ক্ষোভ রয়েছে কি না। প্রয়োজনে রাজীবকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দেন ফিরহাদ।
সেই সময় বনমন্ত্রী ফিরহাদকে জানিয়েছিলেন, তিনি বাইরে আছেন। ফিরে এসে কথা বলবেন। কিন্তু মঙ্গলবারও ‘অরাজনৈতিক’ বিবেক চেতনা উৎসবে যোগ দিলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এখনও কথা বলে ওঠেননি রাজীব। ফলে রাজীবকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা অব্যাহত রয়েছে। তিনি ইদানিং মন্ত্রিসভার দু’টি বৈঠকে যোগ দেননি। বরং দলে দুর্নীতি নিয়ে নানা অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন। দলের মহাসচিব পার্থ তাঁর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করলেও, আলোচনার বিষয়বস্তু জানা যায়নি। হাওড়ায় শুধু রাজীব নয়, জল্পনা রয়েছে রথীন চক্রবর্তী, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া-সহ একাধিক নেতা-নেত্রীকে নিয়ে। এই পরিস্থিিততে শ্রীকান্ত ঘোষের মতো দলবদল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।