দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃআবেদন, অনুরোধ, নির্দেশের পালা শেষ। এবার সরকারি ভাবে ঘোষিত লকডাউন। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক পাঁচটা বাজতেই জরুরি পরিষেবা ছাড়া আর সব বন্ধ করে দেওয়া হল রাজ্যজুড়ে। ঘরের বাইরে আর বেরোনো যাবে না অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া। এই পুরোটাই এখন প্রশাসন ও পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করবে। কোনও নিয়ম ভাঙলে আইনত গুরুতর পদক্ষেপ করা হবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। এক কথায় ২৭ তারিখ মধ্যরাত পর্যন্ত পুরোপুরি ভাবে অবরুদ্ধ হয়ে গেল গোটা রাজ্য।পেট্রাপোল সীমান্ত সীল করে দেওয়া হয়েছে৷
বনগাঁ, হাবড়া সহ বহু এলাকায় মাইকিং করে প্রচারও শুরু হয়, লকডাউনের নির্দেশ মেনে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য।
সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই লকডাউন ঘোষণা হওয়ার আগেই কয়েক দিন ধরেই মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে সব মহল থেকে। কিন্তু তার পরেও বহু মানুষের গা-ছাড়া মনোভাব বারবারই সামনে এসেছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পুলিশি অ্যাকশন শুরু না হলেও, জানা গেছে, এখন, বিকেল পাঁচটা থেকে ‘অফিসিয়াল’ লকডাউন শুরু হতেই পুলিশ দায়িত্ব নেবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই দেশের সব রাজ্যের কাছেই বার্তা দিয়েছেন, লকডাউন ভাঙলে কড়া অবস্থান নিতে হবে। এই রাজ্যেও সেই কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। বলা হয়েছে লকডাউন ভাঙলে বা কেউ কোয়ারেন্টাইনে যেতে না চাইলে, প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা না করলে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হবে।
নবান্নের তরফে নির্দেশিকা দিয়ে স্পষ্ট বলা হয়, মহামারী নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ীই কিছু পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। কেউ সরকারি এই আদেশ ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
এই কাজের জন্য পুলিশবাহিনীর মধ্যে আলাদা করে সচেতনতা প্রচারও করা হয়েছে। তাঁরা কতটা দূর থেকে কথা বলবেন, নিজেদের জন্য কী কী নিরাপত্তা অবলম্বন করবেন, কীভাবে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা দেবেন, কীভাবেই বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেবেন– এই সবটা নিয়েই সচেতন ও প্রশিক্ষিত করা হয়েছে পুলিশকর্মীদের। দেওয়া হয়েছে দু’লক্ষ বিশেষ কিট, যাতে আছে হু অনুমোদিত মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজ়ার।
সরকারি তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, প্রশাসনিক নির্দেশ অমান্য করার জন্য প্রযোজ্য হবে ধারা ১৮৮। জামিন অযোগ্য ২৬৯ ধারা কোনও সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোর বিরুদ্ধে। এই ধারায় কমপক্ষে ছ’মাসের জেল ও জরিমানা হতে পারে। জামিন অযোগ্য ২৭০ ধারা জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক এমন সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোর বিরুদ্ধে। এতে দু’বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। জরিমানা তো আছেই। এছাড়া রয়েছে আইপিসি ২৭১। কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভাঙলে এই আইন প্রযোজ্য। এতে কমপক্ষে ছ’মাসের জেল হতে পারে।
সোমবার উত্তর ২৪পরগনার বনগাঁ নিউ মার্কেটে সকাল থেকেই সতর্কছিল স্থানীয় ব্যাবসায়ী সমিতির সদস্যরা,তাঁরা নজর রাখছেন যাতে কোন ভাবে এক সঙ্গে ৭জনের বেশি সংখ্যায় মানুষ এক দোকানে বা বাজার এলাকায় জড়ো না হয় এবং পাশাপাশি ক্রেতাদেরকে বারংবার বোঝাচ্ছেন,নিয়ম মত প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য এবং নিয়মিত মুদীর দোকান সহ সব্জী বাজার খোলা থাকবে বলেও প্রচার করছেন৷
বনগাঁ স্বর্ণ ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি বিনয় সিংহ জানান ,সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সমস্ত সোনার দোকান সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছেএবং কর্মীদেরকেও ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷পাশা পাশি তাঁদেরকেও সচেতন থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে৷