

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান করা নিয়ে রবিবার থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে নেপাল। মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের, আহত প্রায় ৩০০ জন, এমনটাই খবর সূত্রে। এই পরিস্থিতিতে নেপালে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল ভারত সরকার। পাশাপাশি, প্রতিবেশী দেশের পাশে দাঁড়িয়ে বিবৃতি জারি করা হয়েছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে। মঙ্গলবার সকালে ভারত সরকার সেদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের জন্য একটি বিশেষ বিবৃতি জারি করে।

ভারতের বিদেশমন্ত্রক(MEA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেপালের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং একাধিক প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।

মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ‘গতকাল থেকে নেপালের ঘটনাবলি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যুব সম্প্রদায়ের অনেকের প্রাণ হারানোর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি রইল আমাদের সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কাঠমান্ডু সহ নেপালের আরও কয়েকটি শহরে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সে কারণে ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি নেপাল সরকারের জারি করা নিয়ম ও নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারত নেপালকে ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, নেপালের সব পক্ষের উচিত সংযম দেখানো এবং আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান করা।

উল্লেখ্য, নেপালের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় সোমবার। দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গুলি, জলকামান। বেলা যত বাড়ে, ততই লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু সংখ্যা। পরিস্থিতি বিচারে সোমবার দুপুরেই জানা গিয়েছিল, নেপাল সরকার সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পুনরায় ভাববে। মৃত্যুমিছিলের মাঝে দাঁড়িয়ে পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জেন-জি-দের প্রবল বিক্ষোভের মাঝেই একপ্রকার নতিস্বীকার করে নিয়েছে নেপাল সরকার।

সোশ্যাল মিডিয়াগুলির উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে সোমবার গভীর রাতের বৈঠকের পরেই। শুক্রবার থেকে নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্স-সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার নয় ।
রবিবার থেকেই ছাত্র যুব, এককথায় জেন-জি-রা পথে। সোমবার বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। অনেকের মতে, কেবল অ্যাপ ব্যান নয়, সামগ্রিকভাবে নেপালের পরিস্থিতি, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, সব মিলিয়েই সামনে এসেছে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। সোমবার বিকেলেই জানা যায়, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন।
যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী গুরুং সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সূত্রের খবর, তিনি বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি নীতিগতভাবে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের এর বিরুদ্ধে অটল থাকার কোনও মানে হয় না।’