দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মহাপ্রভূর জন্মস্থান থেকে ‘পরিবর্তন যাত্রা’ সূচনা করলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। হেলিকপ্টার থেকে নেমেই তিনি চলে যান, চৈতন্য আশ্রমে। পরে নবদ্বীপ চটির মাঠে সভায় যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলায় তুষ্টিকরণের রাজনীতি চলছে। প্রশাসনের রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। বাংলার মানুষ এবার জেগে উঠেছেন। এখান থেকে এই যাত্রার সূচনা হল। রাজ্যের পাঁচ জায়গায় এই পরিবর্তন যাত্রার সূচনা হবে। বাংলায় পদ্ম ফুঁটবেই।’ বাংলায় স্লোগান দেন, ‘অনেক হয়েছে মমতা। পরিবর্তন চায় জনতা।’ তবে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির বক্তব্যের শেষটিই আপাতত রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে।
এদিন ‘জয় ভারত জয় বাঙ্গাল’ বলে বক্তব্য শেষ করেছেন নাড্ডা। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ‘জয় বাংলা’ নিয়ে যেখানে বিজেপি-র এত আপত্তি সেখানে খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মমতাকে অনুসরণ করলেন!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে আকছার শোনা যায় স্লোগানটি। যে কোনও বক্তব্যের শেষ করেন এই স্লোগান দিয়েই। শুধু মমতা নন, রাজ্যের মন্ত্রী থেকে তৃণমূলের বড়-মেজ-সেজ নেতারাও ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত থাকেন। আর তা নিয়েই ভয়ানক আপত্তি বিজেপি-র। সম্প্রতি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ‘জয় বাংলা’-র প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে লড়ছেন বলেও তোপ দেগেছিলেন। তবে স্বয়ং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মমতার দেখানো পথে হাঁটায় তৃণমূল রাজনৈতিক হাতিয়ার পেয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
অন্যদিকে, এদিনের সভা থেকে কাটমানি ইস্যুতে তৃণমূলকে তোপ দাগেন তিনি। বলেন, ‘মমতা শুধু নেতিবাচক রাজনীতি করছেন।
মা-মাটি-মানুষের নামে যে সরকার এসেছিল, তারা বাংলার মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে।’ বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, ‘এ রাজ্যে শুধু হবে না বলা হয়। এই সভা থেকে বেরিয়ে সবাই বলবেন, বাংলায় আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হতে দেননি মমতা। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আয়ুষ্মান ভারত বাংলায় চালু হবেই। কিষান সম্মান নিধিতে বাংলার ৭০ লক্ষ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মমতা হতে দেননি। এখন মমতা যাবেন, আর এসব হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার উপর যদি আক্রমণ হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা।’ নাড্ডার কটাক্ষ, ‘বাংলায় যেখানেই যাই পিসি-ভাইপোর করজোড়ে পোস্টার দেখতে পাই। আমায় অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।
বাংলার সংস্কৃতি রক্ষার ক্ষমতা মমতার নেই।’ বলেছেন, ‘যেভাবে আমার নামের বিকৃতি করেছেন, তাতেই আপনার সংস্কৃতি বোধ স্পষ্ট। আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়িয়ে অভিযোগ করেছেন, নেতাজিকে আপনারা ভুলে গিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যথাযথ মর্যাদা দিতেই দিদিরও মনে পড়ল। এদের বিবেক বলে কিছু নেই।’ অন্যদিকে, এদিন রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, ‘ধমকে চমকে আমাদের আটকে রাখা যাবে না। বাংলায় পরিবর্তন আসবেই। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষও।
প্রসঙ্গত, ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা আদতে একটি বাসের যাত্রা। এদিন তারই সূচনা করেন নাড্ডা। আগামী সোমবার, সাগরের কপিল মুনির আশ্রম থেকে কলকাতার উদ্দেশে চলতে শুরু করবে আরেকটি ‘পরিবর্তন যাত্রা’-র রথ। কোচবিহার থেকে অন্য একটি রথযাত্রার সূচনা করার কথা অমিত শাহের। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম ও তারাপীঠেও রথযাত্রার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপি-র।