দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশের বিভিন্ন অংশে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় চরম বিক্ষোভের জন্য বিরোধীদের দিকে আঙুল তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস ও তার শরিক দলগুলিই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে ধুন্ধুমার বাঁধিয়েছে। অসমবাসী হিংসা থেকে সরে এসেছে বলে দাবি করে এ দিন তাঁদের অভিনন্দনও জানিয়েছেন নমো।

রবিবার ঝাড়খণ্ডের দুমকার নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, ‘অসমের ভাই ও বোনেদের অভিনন্দন জানাই। তাঁরা হিংসায় অংশ নেওয়া থেকে সরে এসেছে। তাঁরা শান্তিপূর্ণ পথে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরছেন।’

কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কংগ্রেস ও তার সমর্থকরা আগুন ছড়াচ্ছে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের মানুষ হিংসা পরিত্যাগ করেছেন। কংগ্রেসের পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিচ্ছে যে সংসদে যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে তা একেবারে সঠিক।’

বিরোধী দলগুলি মানুষের কষ্ট না-বুঝে শুধু নিজেদের ইমারত গড়ে তুলেছেন বলেও কটাক্ষ করেন মোদী। দেশে বিজেপিশাসিত সরকারের সাফল্যের তালিকা তুলে ধরে নমো বলেছেন, ‘দেশের জন্য একটি মাত্র দল যে উন্নয়ন এনেছে তা কার্যকর করতেই আমি এখানে এসেছি।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার অশান্ত হয়েছিল হাওড়ার উলুবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা। এই অশান্তির রেশ কাটতে না কাটতে শনিবার সকাল থেকে এই হিংসাশ্রয়ী প্রতিবাদ ছড়িয়ে যায় জেলায় জেলায়। বিস্তার বাড়ে, বাড়ে তীব্রতাও।

শনিবার রেল স্টেশনে হামলার পাশাপাশি যাত্রিবাহী বাসের উপরেও হামলা ভাঙচুর হয়। উত্তর ২৪ পরগনায় আমডাঙার কাছে জাতীয় সড়ক আটকে গাড়ি ও বাস ভাঙচুর হয়। আহত হন অনেক মানুষ। ছাড় পায়নি অ্যাম্বুল্যান্সও। পরিস্থিতি দেখে বারবার আন্দোলনকারীদের শান্ত-সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অবশেষে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, হাওড়ায় বন্ধ করে দেওয়া হল ইন্টারনেট পরিষেবা। শুধু তাই নয়, সেই বারাসাত মহকুমা, বসিরহাট মহকুমা, বারুইপুর ও ক্যানিং মহকুমাতেও বন্ধ করা হচ্ছে ইন্টারনেট। রাজ্যসরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার বারবার বলা সত্বেও কিছু বহিরাগত অন্যদের ফাঁদে পা দিয়ে অশান্তি করছে। নিরুপায় হয়ে সরকারকে কিছু এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করতে হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, পরিস্থিতি যে জায়গায় যাচ্ছে, তাতে রাজ্য সরকারের সামনে বিকল্প কোনও পথ খোলা ছিল না। শুক্রবার বিকেল থেকেই প্রশাসনের কাছে খবর ছিল, ফেসবুকের একাধিক গ্রুপ এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ঘৃণা। ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে। তাই সেসব রুখতেই এই পদক্ষেপ। এখন দেখার ইন্টারনেট বন্ধ করার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয় কিনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here