নববর্ষে ইলিশের দাম চড়া

0
1000

প্রদীপ দে, ঢাকাঃ দু’দিন বাদেই সোমবার বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ। আর এই উৎসবের সঙ্গে নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে ইলিশের। কিন্তু দাম চড়া হওয়ায় এবার পহেলা বৈশাখে আর পাতে উঠবে না ইলিশ। পদ্মা বা মেঘনা, কোথাও মিলছে না ইলিশ। চড়েছে দাম। এক কেজি সাইজের একটি ইলিশ শুক্রবার ঢাকার বাজারে বিক্রি হয়েছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকায়। সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের একেবারেই বাইরে।

বেশি দামেও কিনছেন কেউ কেউ। অনেকে আবার দাম শুনেই মন খারাপ করে ফিরে যাচ্ছেন। রাজধানীর ফকিরাপুল বাজারের ইলিশ মাছের ক্রেতা সইফুল আলম লিটন জানান, পহেলা বৈশাখের জন্যই একটি ইলিশ মাছ কিনেছি। এক কেজির বেশি ওজন হবে না। দাম নিয়েছে ১৮৫০ টাকা। খানিকটা ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, অতিরিক্ত দাম বেড়ে গেছে। তাঁর কথায় পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়া হবে না। ইলিশ মাছ নিধন বন্ধ করতে হলে পহেলা বৈশাখে ইলিশ না খাওয়াই ভাল। এটি বানানো সংস্কৃতি। বরং দেশীয় বিভিন্ন প্রকার মাছ দিয়ে পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন করলে ভাল হয়। আমি দেশি মাছও কিনেছি। বাড়িতে অতিথি এসেছেন ভারত থেকে তার জন্য একটা ইলিশ কিনতে এসেই দেখি আগুনছোঁয়া দাম ৷


একই বাজারের মাছ বিক্রেতা সুকুর গাজীর কথায়, গত বছরের চেয়ে এবার ইলিশের চাহিদা কম। এ কারণে দামও সেভাবে বাড়েনি। তিনি বলেন, ৫০০ গ্রাম ইলিশ ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বছরের অন্য সময়েও এই দামে মাছ বিক্রি হয়। তবে মাঝারি মানের ৮০০ থেকে ১ কেজি সাইজের ইলিশের দাম চড়া। তিনি বলেন, প্রতি জোড়া মাঝারি মানের ইলিশ ২ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ি ও গুলিস্তানের ঠাঁটারি বাজার–সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ক্রেতা সমাগম যথেষ্ট। বাজারগুলোতে ইলিশের পশরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। সব জায়গাতেই বৈশাখকে উপলক্ষ করে ইলিশের বাজার রীতিমতো চড়া। ওজন যত বেশি, তার দামও আকাশছোঁয়া। কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, ইলিশের আমদানি ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

এই ওজনের ইলিশ কিছুদিন আগেও এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া নদীর ৯০০ থেকে ১ কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। তবে বার্মিজ ও সাগরের ইলিশের আমদানি বেশি। নদীতে ইলিশ খুব একটা উঠছে না, তাই দামটা বেশি- জানালেন বিক্রেতা তৌকিব হোসেন। তিনি বলেন, ‘তাজা’ বলে যেসব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগই কয়েক মাস আগে মজুত করা হিমঘরের ইলিশ। আসলে এখন খুব একটা ইলিশ আসছে না। আড়তদাররা পয়লা বৈশাখের দুই সপ্তাহ আগে থেকে এগুলো বাজারে ছেড়েছে। এছাড়া বাজারে মায়ানমারের ইলিশও মিলছে।আরেক ইলিশ বিক্রেতা বিমল হালদার বলেন, বৈশাখ এলে ইলিশের চাহিদা বাড়ে।

সরকার মার্চ ও এপ্রিল এ দুই মাস জাটকা ধরা নিষেধ করায় নদীতে শুধু বড় মাছ ধরতে জাল ফেলছেন জেলেরা। তাই বাজারে এখন বার্মিজ ও সাগরের ইলিশ বেশি। এই ইলিশ নদীর ইলিশের তুলনায় স্বাদ ও গন্ধে কম হওয়ায় এদের চাহিদা কম।

এক বাঙালি খাদ্যরশিক নিত্যানন্দ বিশ্বাসের কথায়,দাম চড়া হোক না কেন এই ইলিশ দিয়ে পহেলা বৈশাখ পার করতে হবে বাঙালিদের এটাই শেষ কথা৷ ছবি-সংগৃহীত।

Previous articleস্নাইপার নিশানা! রাহুল গান্ধীকে হত্যার চেষ্টা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখল কংগ্রেস,কেন্দ্র বলল মোবাইলের আলো
Next articleমনোনয়ন জমা মমতা দীনেশের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here