সোমা দেবনাথ, কলকাতা: পাতা ঝরার সময় মানেই বসন্ত কাল, আর বসন্ত মানেই হলো রঙের উৎসব। হিন্দু ধর্মমতে বলা হয় শ্রীকৃষ্ণের দোলউৎসব এবং এই দিনটি হলো মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের জন্মতিথি। সে দেশেই হোক কিংবা বিদেশে যার আবেদন সর্বময়।
এসেছে আমাদের চিরপরিচিত বসন্তের এই দোল উৎসব। সাহিত্যেও তার বিপুল পরিচিতি; রবীন্দ্রনাথ তার গানে গল্পে বার বার বর্ণনা করেছেন দোলউৎসবের কথা।
শান্তিনিকেতনের মতো রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্ত উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা সহ হাজার হাজার মানুষ।
তাই সারাবছরের হাজারো ব্যাস্ততা ভুলে প্রতি বছরই আট থেকে আশি সকলেই এখানে মেতে ওঠেন রঙের খেলার আনন্দে।
এখানে জাতি বর্ণ নির্বিশেষে রঙ আবির হাতে নিয়ে একে ওপরের সাথে মেতে ওঠে রঙের খেলায়, তাই বলা হয় বসন্ত উৎসবেরই আরেক নাম ভালোবাসার উৎসব।
প্রায় সবাই কেই সনাতন ভারতীয় পোশাকে সাজতে দেখা যায়, ছেলেদের পরনে থাকে পাঞ্জাবী, শান্তিনিকেতনের মতো এখানেও পলাশ ফুলে সাজিয়ে তোলেন নিজেকে৷
একতারার সুরে সবাই যেন হারিয়ে যায় রবিঠাকুরের শান্তিনিকেতনর সেই ছাতিম তলায়।
ফাগুন হাওয়া গায়ে মেখে বসন্ত হাজির ৷ বসন্ত মানেই গাছে গাছে নতুন ফুল পাতা ৷ বসন্ত মানেই চারিদিকে রঙের উৎসব ৷ আর প্রতি বছরের মত বৃহস্পতিবারও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনও সেজে উঠল রঙের মেলায় প্রত্যেক বছরই রবীন্দ্রভারতীতে বসন্ত উৎসবে মানুষের ভিড় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। স্থান সংকুলান এবং ভিড়ের হাত থেকে রবীন্দ্রনাথের বাড়িকে বাঁচাতে গত বছর থেকেই এই অনুষ্ঠান জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে বিটি রোড ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতি বছরের মত এবারেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনের “মরকতকুজ্ঞে” অনুষ্ঠিত হলো বসন্ত উৎসব।
ছোট থেকে বড় বিভিন্ন বয়েসের মহিলারা উপস্থিত এই উৎসবে, সংখ্যায় কম হলেও ছিলেন পুরুষরাও।
বেশীরভাগ মহিলার পরনেই ছিল হলুদ শাড়ি ৷ মোবাইল হাতে চলছিল সেলফি তোলাও ৷
ছিল নাচগান-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ৷
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় আবীর রাঙা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। এক ফাগুনের গানে জাগ্রত বসন্তকে স্বাগত জানাল ওরা। উত্তর কলকাতার মেয়েটা যেমন এবার প্রথম এসেছে জোড়াসাঁকোর বসন্ত উতসবে। পুরনো বন্ধু আর ফেলা আসা আড্ডার টানে ফিরে ফিরে এসেছে উত্তর২৪পরগনা জেলার কেউ।
উৎসবের শত রঙ দিনভর লুটোপুটি খেল আশোকে পলাশে। নীল দিগন্তেই কি শুধু ফুলের আবীর লাগে। সে আবীর রঙ লাগাল দামাল মনেও।
পুরনো প্রেম নতুন করে রাঙিয়ে নেওয়া। চোখের ইসারায় রঙ বদল। কারো ডিজিটাল দামী ক্যামেরা আবার কারো স্মার্ট মোবাইল এর ক্যামেরায় বান্ধবীর সেরা ছবি তোলা সবই হল রঙে রঙে।
রাঙিয়ে দিয়ে যাওগো এবার যাওয়ার আগে। সূর্যের তেজ, সবুজ ঘাস সত্যিই রাঙিয়ে দিয়ে গেল পলাশ শিমুলদের৷ দেখুন ভিডিও–