দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কদিন আগে বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে দুয়ারে দুয়ারে যাবে সরকার। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘দুয়ারে সরকার’। মঙ্গলবার থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আর বৃহস্পতিবারই মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে তফসিলি সার্টিফিকেট হাতে পেলেন বালুরঘাটের যুবক।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট পুরসভার নামাবাঙ্গির বাসিন্দা পিন্টু সাহা এই প্রকল্পের কথা শুনে বৃহস্পতিবার সুবর্ণ সেরিমোনিয়াল লজের ক্যাম্পে গিয়ে হাজির হন। নিজের তফসিলি সার্টিফিকেটের আবেদন করতেই সেখানে যান তিনি। দুপুর ১২টা নাগাদ তিনি ক্যাম্পে গেলে অনলাইনেই তাঁর আবেদন নথিভুক্ত হয়। তারপরে তাঁর নথি পরীক্ষা করে দেখেন সেখানে উপস্থিত আধিকারিকরা। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যায়।
দুপুর ৩টে ৪৫ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক ক্যাম্প পরিদর্শনে গেলে তাঁর হাত থেকেই নিজের সার্টিফিকেট পেয়ে যান পিন্টু। মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে কোনও দৌড়ঝাঁপ ছাড়াই এই সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই যুবক।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা এখনও যাঁরা পাননি, বা আবেদন করেননি, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্যই এই পদক্ষেপ। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভার ওয়ার্ডের স্তরে এ জন্য শিবিরের আয়োজন করা হবে। স্থানীয় কোনও স্কুল বা কলেজের ভবন বা কমিউনিটি সেন্টারে এই সব শিবিরগুলি চলবে। সরকারের ১০টি প্রকল্পকে এই যোজনার আওতায় রাখা হয়েছে– স্বাস্থ্য সাথী, শিক্ষাশ্রী, খাদ্য সাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, ঐক্যশ্রী, কাস্ট সার্টিফিকেট, তফসিলি বন্ধু, জয় জহর ও একশ দিনের কাজ।
মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পেতে হলে অর্থাৎ নগদ বিহীন এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর এবং পৌর ওয়ার্ড স্তরে আয়োজিত ক্যাম্পে আসতে হবে। প্রথম রাউন্ডে কেউ এসওপি নিয়ে এলে দ্বিতীয় রাউন্ডেই কার্ড পেয়ে যাবেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে এসওপি দিলে তৃতীয় রাউন্ডে কার্ড পাবেন।
তিনি জানান, জাতিগত শংসাপত্রের জন্য ক্যাম্পে এসে আবেদন করা যাবে। তা ছাড়া জয় জহর এবং তপশিলী বন্ধু প্রকল্পের আওতায় আদিবাসী উন্নয়ন দফতর এবং অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকে ৬০ বছরের উর্ধ্বে আদিবাসী, এবং দলিত সম্প্রদায়ের কোনও বর্ষীয়ান নাগরিক (যিনি আর কোনও সরকারি আর্থিক সুবিধা পান না, তাঁকে) মাসিক ১০০০ টাকা অর্থ সাহায্য পাবেন।
মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, খাদ্যসাথী সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার জন্যও এই ক্যাম্পে আবেদন যাবে। নাম ঠিকানা সংশোধন করাও হবে। একই ভাবে ১০০ দিনের কাজ এবং জব কার্ড সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা হলে সাহায্য করা হবে।