দেশের সময়,ওয়েবডেস্কঃ নিয়ম করে সতর্কতা ও প্রচার চলছে প্রশাসনের তরফে। আতঙ্ক এবং আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সবশেষে তাঁদের ভরসা সেই কলকাতার হাসপাতাল। কারণ, দুই ২৪ পরগনার কোথাও করোনা-সংক্রমণ পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগ বলতে জেলার কয়েকটি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং কোয়রান্টিন সেন্টার।
গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হলে সামান্য কয়েকটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে কীভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে, তার উত্তর মিলছে না।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা হাসপাতাল-সহ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল ,বসিরহাট, বিধাননগর,এবং ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে আইসোলেসন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে।
তবে সর্বত্রই শয্যা সংখ্যা খুবই কম। এই অবস্থায় জেলায় যদি গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়, তা হলে কী ভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে তার কোনও স্পষ্ট জবাব পাওয়া যায়নি জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে।
তবে জেলায় বেশ কিছু কোয়রান্টিন সেন্টার বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। যদিও রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টারগুলি এই জেলার মধ্যেই পড়ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তপন সাহা বলেন, জেলার প্রত্যেকটি হাসপাতালেই জ্বরের রোগীদের জন্য আলাদা লাইন, এবং অন্য রোগীদের থেকে আলাদা রেখে চিকিৎসা চলছে।
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চার শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ফিভার ক্লিনিকও। এই হাসপাতাল থেকে এখনও পর্যন্ত, ছ’জন রোগীকে বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যদিও পরীক্ষায় কারও সংক্রমণের খবর নেই। হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো জনান, আগাম ব্যবস্থা হিসেবে আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা আরও ৫০টি বাড়ানোর কাজ চলছে।
কিন্তু গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হলে এই স্বস্তি স্থায়ী হবে কিনা সেই প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসকদের একাংশ। এক চিকিৎসক জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে কেউ ভর্তি হলে, তাঁদের চিকিৎসার পরিকাঠামো তাঁদের নেই। দুই জেলার প্রতিটি ব্লক হাসপাতালের অবস্থা কার্যত একই। করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে পরীক্ষার সরঞ্জাম দূরের কথা, প্রাথমিক চিকিৎসা কীভাবে দেওয়া হবে তাও বুঝতে পারছেন না জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
কুলতলি ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, সংক্রমণ বাড়লে এলাকার একাধিক ফ্লাড শেল্টারে অস্থায়ী ভাবে আইসোলেশন ওয়ার্ড করে রোগীদের চিকিৎসার পরিকল্পনা চলছে।
ডায়মন্ড হারবার এবং ক্যানিং এলাকায় জ্বরের উপসর্গ নিয়ে কোনও রোগী হাসপাতালে এলে তাঁদের কলকাতায় রেফার করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ব্লক স্তরে একাধিক কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি রাখা হয়েছে।
সংক্রমণ বাড়লে তা মোকাবিলার জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। গোসাবা হাসপাতালে ফিভার সেন্টার নামে আলাদা একটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। জ্বরের উপসর্গ নিয়ে কোনও রোগী এলে তাঁকে আলাদা ভর্তি রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। মহকুমা হাসপাতালেও আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি রাখা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পরিমল ডাকুয়া জানান, “আমরা প্রাথমিকভাবে তৈরি আছি।”
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আইসোলেশনে ২০টি এবং কোয়রান্টিনে ৩৫টি বেড তৈরি রাখা আছে। প্রযোজনে আরও বেড বাড়ানো হবে। শনিবার পর্যন্ত ১৯০০ জন ভিন্ রাজ্য এবং বিদেশ থেকে আসা মানুষকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।