দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রাম। একুশের ভোটযুদ্ধের এপিসেন্টার বিধানসভা আসন ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এরই মাঝে প্রচারে রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী। জনসভা মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে ভোট ময়দানে ফের শুরু জল্পনা।

বিকেল তখন সওয়া চারটে। নন্দীগ্রাম সহ দ্বিতীয় দফায় ৩০ আসনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও ২ ঘন্টার চলার কথা। ঠিক এমনই সময়ে উলুবেড়িয়ার জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশ্ন ছুড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে—“দিদি! ও দিদি! কী শুনছি! আপনি নাকি শেষ দফার ভোটে আরও একটি আসনে মনোনয়ন পেশ করবেন!”
প্রধানমন্ত্রীর এই টিপ্পনির উদ্দেশ্য স্পষ্ট। মোদী পরিষ্কার বোঝাতে চেয়েছেন, নন্দীগ্রামে হারতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথা প্রধানমন্ত্রী অনেকটাই স্পষ্ট করে বলেছেনও। তবে তৃণমূল নেত্রী যাতে দ্বিতীয় কোনও আসন থেকে আর প্রার্থী হতে না পারেন, সেই রাস্তাটাই বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি।

নরেন্দ্র মোদীর দাবি, নন্দীগ্রামে নিশ্চিত হার বুঝে বাকি ৬ দফার ২৩৬ আসনের মধ্যে আরও একটি অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত কেন্দ্র বেছে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উলুবেড়িয়ার মঞ্চ থেকে এদিন মোদী বলেন, ‘নন্দীগ্রামে একটু আগে যা হল তাতে স্পষ্ট নিজের হার মেনে নিয়েছেন দিদি। বাংলায় আসছে বিজেপি। শোনা যাচ্ছে দিদি নাকি আরও এক কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন জমা দিতে চলেছেন’ । উল্লেখ্য, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন তৃণমূল সুপ্রিমো টালিগঞ্জ কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণার সময় মজার ছলে মন্তব্য করেছিলেন, ওই কেন্দ্র থেকে তিনি নিজেও দাঁড়াতে পারেন। টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন অরূপ বিশ্বাস। মোদীর মন্তব্যে এদিন নতুন করে ফের জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে।

এব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই দাবি উড়িয়ে দেয়। দলীয় সূত্রে খবর, অন্য কোনও কেন্দ্র নয়, একুশের নির্বাচনে শুধু মাত্র নন্দীগ্রাম থেকেই লড়ছেন তিনি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে মোদী বলেন, ‘বাংলার লোকের ক্ষোভ থেকে আপনাকে আর কেউ বাঁচাতে পারবে না।বাংলার জনগণ ঠিক করে দিয়েছেন দিদিকে এবার যেতেই হবে।

নন্দীগ্রাম এদিন সেই হিসেব দিয়ে দিয়েছে।’ প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে ভোট ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। নন্দীগ্রামের ঘটনার পর সুষ্ঠু ভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ফোন করেন মমতা। এদিন সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ৬৩টি অভিযোগ পড়েছে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই এমনটা করা হচ্ছে। আমরা আদালতে যাব। আইনি ব্যবস্থা নেব।’

তাঁর কথায় নন্দীগ্রামে চিটিংবাজি হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ভোট হয়েছে। আমি নন্দীগ্রাম নিয়ে চিন্তিত নই। গণতন্ত্র নিয়ে চিন্তিত।


এর পরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নন্দীগ্রামে যা হয়েছে সবাই দেখেছে। এতো পরিষ্কার যে, মমতা দিদি ওখানে হার স্বীকার করে নিয়েছেন। বাংলায় বিজেপি সরকার গড়তে চলেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলায় এলেই কানাঘুঁষো শুনতে পাই, দিদি নাকি আরও একটা আসন থেকে লড়তে পারেন। কিন্তু যেখানেই লড়ুন না কেন, সেখানেও বাংলার মানুষ আপনাকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here