দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ ফাঁসির দড়ি তৈরি। ‘ডামি’ মহড়াও সারা হয়ে গিয়েছে। এখন খালি নির্দেশের অপেক্ষা। তারপরেই দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির সাজা কার্যকর করা হবে বলেই তিহাড় জেল সূত্রে খবর।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিহাড় জেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, বক্সারের জেল থেকে ১০টি ফাঁসির দড়ি এসে গিয়েছে তিহাড়ে। কিন্তু সেখানে ফাঁসুড়ে না থাকায় অন্য জেল থেকে ফাঁসুরে নিয়ে আসা হবে। নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষী অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিংহ, বিনয় কুমার এবং পবন গুপ্ত তিহাড় জেলে বন্দি। তাদের ফাঁসির সাজা কার্যকর করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু কবে তা হবে, সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। যতদূর খবর, শিগগিরই হয়তো এই সাজা কার্যকর করা হবে।
ফাঁসির দড়ির তৈরির জন্য বক্সারের এই জেল বহুদিন ধরেই বিখ্যাত। ২০১৬-১৭ সালে সংসদ হামলায় দোষী আফজল গুরুর ফাঁসির সময় শেষ বার এই জেল থেকে সরবরাহ হয়েছিল ফাঁসির দড়ি। দেশের যে প্রান্তেই ফাঁসির সাজা ঘোষণা হোক না কেন দড়ি যায় বক্সারের এই জেল থেকেই। এবার একসঙ্গে ১০টি ফাঁসির দড়ি তৈরির বায়না পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় জোর জল্পনা।
বক্সারের জেলে তৈরি ফাঁসির দড়ির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ১৫২ স্ট্র্যান্ডের সরু সুতো পাকিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী দৈর্ঘ্য ও ব্যাসের দড়ি বানানো হয়। প্রতিটি দড়িতে প্রয়োজন হয় ৭ হাজার সুতো। দড়ির উপরের অংশ মসৃণ করতে প্রয়োজন হয় লোহা এবং পিতলের সরু সুতো। ফাঁসির পরে দড়ি যাতে গলায় শক্ত ভাবে আটকে থাকে সেই কারণেই এটা করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলের সুপার। একটা দড়ি তৈরি করতে ৫ থেকে ৬ জন কারিগর লাগে। খুব বেশিদিন এই দড়ি সংরক্ষণ করা যায় না। বেশিদিন ফেলে রাখলে দড়ি কমজোরি হয়ে যায়। তাই কোনও সাজা কার্যকর করার ঠিক আগেই নিয়ে আসা হয় এই দড়ি।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানী শহর দিল্লিতে গভীর রাতে ফাঁকা বাসে জোর করে তুলে নেওয়া হয় বছর কুড়ির এক তরুণীকে। মেডিক্যালের ওই ছাত্রীর উপর চলে অমানবিক অত্যাচার। নৃশংশতার সীমা পেরিয়ে ছ’জন মিলে তরুণীকে গণধর্ষণ করে। এই ঘটনায় ৫ অভিযুক্তের ফাঁসির আদেশ দেয় নিম্ন আদালত। আর এক দোষী অপরাধের সময় নাবালক হওয়ায় সর্বোচ্চ তিন বছর জেল খাটার পর ছাড়া পেয়ে যায়। জেলে থাকাকালীনই এক দোষী রাম সিং আত্মহত্যা করে। দিল্লি হাইকোর্টে ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজার আর্জি জানায় বাকি তিন দোষী। দিল্লি হাইকোর্টে সেই আর্জি খারিজ হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টেও খারিজ হয় এই আবেদন।