নীলাদ্রি ভৌমিক: কলকাতা:দেশেরসময়ঃপুজোর মুখে নিম্নচাপের জেরে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারন মানুষ ওড়িশা থেকে বাংলা ৷এই ঝড়ের জন্য ৬৫-৭৫কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে।এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গেের বহু পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা মন্ডপে আনা থেকে সাময়িক ছেদ টেনেছেন৷ এরকম অবস্থায় লেকটাউন শ্রীভূমি, বারাসতের কলুপুকুর, হাবড়ার কামার থুবার আমরা সবাই, অশোকনগরেব অগ্রদূত, বনগাঁর অভিযান সংঘ, বসির হাটের খোলাপোতা ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তারা নির্দ্ধারিত কর্মসৃচির পরিবর্তন করেছেন। নিম্নচাপের ভ্রুকুটি প্রবল হতেই মাথায় হাত কুমোরপাড়াতেও। মূর্তি নির্মাণের শেষ পর্যায়ে যাতে আবহাওয়ার জন্য বিপদ না হয়, তার জন্য চলছে সুরক্ষার ব্যস্ততা। বৃষ্টির জল ও ঝোড়ো হাওয়া থেকে তিল তিল করে গড়ে তোলা মা-দুর্গার মূর্তিকে নির্বিঘ্নে পুজো কমিটির হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর বনগাঁর শিল্পী স্বপন ভট্টাচার্যনা থেকে দেঙ্গগার মৃৎ শিল্পী পাল পরিবারের সকলে। বোধনের আগেই নিম্নচাপের গতিবিধি দেখে আতঙ্কিত জেলা প্রশাসনও। দুর্যোগ মোকাবিলায় সমস্তরকম ব্যবস্থা ঠিক রাখতে জেলাশাসক অন্তরা আচার্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির অধিকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এককথায় আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতির দিকে তীক্ষ্ণ নজর যেমন প্রশাসনের , সেরকম উদ্বিগ্ন বিভিন্ন পুজোকমিটি সহ বনেদি বাড়ির পুজো কর্তারাও। পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’–তে পরিবর্তিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশার উত্তরপশ্চিমাংশে গোপালপুর এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমের উপর। ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭৫–১০০ কিলোমিটার। সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় ওড়িশা, অন্ধ্র এবং পশ্চিমবঙ্গে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তিতলির প্রভাবে ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং তার জেরে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বুধ থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ওড়িশা এবং অন্ধ্রে তিতলির দাপট সব থেকে বেশি থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। তারপর ঘূর্ণিঝড় তিতলি উত্তরপূর্বে ঘুরে গিয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে উপকূলবর্তী ওড়িশা হয়ে শক্তি হারাবে বলে পূর্বাভাস মৌসম ভবনের।
তিতলির আতঙ্কে মঙ্গলবার ওড়িশার পাঁচটি জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিশেষ ত্রাণ কমিশনার বিষ্ণুপদ শেঠি বললেন, গজপতি, গঞ্জাম, পুরী, জগৎসিংপুর এবং কেন্দ্রপড়া জেলার জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা যেন এখন থেকেই নিরাপদ আশ্রয় শিবিরে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যান। নিচু এলাকাগুলিতে প্লাবনের আশঙ্কায় দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য আগে থেকেই প্রায় ৩০০টি মোটরবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুই রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হাই অ্যালার্ট। স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। -দেশের সময়: