দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে নিম্নচাপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও শক্তিশালী হচ্ছে এই নিম্নচাপ। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও আজ থেকে বর্ষণের তীব্রতা বাড়বে বলে সতর্কতা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপের জেরে উত্তাল হতে পারে সমুদ্র। বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আলিপুর জানিয়েছে, আগামী ২৩ অগস্ট রবিবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ফের একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। যার প্রভাবে ২৫ অগস্ট মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৫ তারিখ পর্যন্ত প্রায় রোজই দক্ষিণবঙ্গের মোটামুটি সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে। কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি কোথাও বা বিক্ষিপ্ত ভাবে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। মূলত নিম্নচাপের প্রভাব থাকবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চলের জেলায়। সতর্কতার খাতিরে মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে।
আপাতত বঙ্গোপসাগরে আরও একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের এই নিম্নচাপ এখন ওড়িশা উপকূল বরাবর অবস্থান করছে। ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে তা শক্তিশালী হচ্ছে। অগ্রসর হচ্ছে পশ্চিম দিকে। এই নিম্নচাপের প্রভাবে আজ শুক্রবার এবং আগামীকাল শনিবার দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
শুক্রবার সকাল থেকে মেঘলা রয়েছে আকাশ। গত মঙ্গলবার থেকেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। গাঙ্গেয় উপকূলের জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় নিম্নচাপের প্রভাব বেশি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেশ খানিকটা হেরফের হয়েছে তাপমাত্রায়। আজ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা ২৬ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে বলে জানিয়েছে আলিপুর।
আজ সকালে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। গতকাল সন্ধ্যায় শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৩ থেকে ৯৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৫৩.৯ মিলিমিটার।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বর্ষাকালে মৌসুমি হাওয়ার প্রভাবে বৃষ্টি হলেও একাধিক নিম্নচাপ তাতে গতি আনে, ঘাটতি কমায়। এবার তেমনটা হয়নি। জুলাই মাসে একটিও নিম্নচাপ এ রাজ্যের উপকূলে দানা বাঁধেনি। আগস্টের প্রথম অর্ধে দু–তিনটি দানা বাঁধলেও সেগুলি হয় দ্রুত ওডিশার দিকে সরে গিয়েছিল। নয় তো সাগরেই শক্তি ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। ফলে বৃষ্টি ঘাটতি হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের আশা, পরপর দুটি নিম্নচাপের হাত ধরে সেই ঘাটতি অনেকটাই কমে যাবে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি চাষবাসের সহায়ক হবে।
গত কয়েক বছরের আবহাওয়া চিত্র বলছে, দ্বিতীয়ার্ধেই বর্ষা বেশি শক্তিশালী হয়। স্বাভাবিক ভাবেই, এবারও তেমনটা হবে বলে আশাবাদী আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।