ইস্টবেঙ্গল ২ : ০ মোহনবাগান
অধিকাংশ ফুটবল বিশেষজ্ঞদের বাজি ছিল মোহনবাগান। সৌজন্যে সনি নর্ডি। সেই সনিকে মাঝমাঠেই বোতলবন্দি করে রাখলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো মেনেন্দেস। আর বরাবরের মত ডার্বি জেতা হল না অধুনা বাগান কোচ খালিদ জামিলের। তবে শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক খেলছিল ডিকা-হেনরি-নর্ডিরা। ইস্টবেঙ্গলকে সেখানে বড্ড বেশি রক্ষণাত্মক লাগছিল। বারে বারে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে আসছিল নর্ডি হেনরিরা। কিন্তু লাল হলুদ রক্ষণের দুই স্তম্ভ জনি অ্যাকোস্টা ও বোরহা গোমেজের কাছে থেমে যাচ্ছিল সমস্ত বাগান আক্রমণ।
খেলার বয়স তখন ৩৫ মিনিট। কাশিমের পাস গিয়ে পৌঁছল জবি জাস্টিনের পায়ে। ৩০ মিটার কোনাকুনি দৌড়ে কিংসলেকে ডজ করে জবির ঠিকানা লেখা পাসে আলতো ঠোকায় জালে বল জড়িয়ে দেন স্যান্টোস কোলাডো। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস তখন লাল হলুদ গ্যালারিতে। লাল হলুদ মশাল আর ফ্লাশলাইটের ঝলকানিতে গোটা মাঠ এক অন্য পরিবেশ পেল। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ অবস্থায়।
দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলকে অনেকটাই সংঘবদ্ধ দেখাল। ৫৩ মিনিট নাগাদ কর্নার পায় সবুজ মেরুন। সনির পা থেকে আসা বল ডিপান্দা ডিকার মাথায় লেগে গোলে ঢুকলেও রেফারি ফাউলের নির্দেশ দিয়ে গোল বাতিল করে দেন।
৭৫ মিনিটে ডিকার মারা কর্নারে হেড করে গোল করে যান জবি জাস্টিন। বাগান রক্ষণকে তখন জবির ধারেকাছেও দেখা গেল না। গোলকিপার শিল্টনকে কার্যত দাঁড় করিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ এগিয়ে দিলেন জবি। গোল করে এবং গোল করিয়ে ম্যাচের নায়ক সেই জবিই। পুরো ম্যাচে যে পরিমাণ গোল মিস করলেন বাগান স্ট্রাইকাররা তা যে কোনও ফুটবল সমর্থকের হতাশা সৃষ্টি করবে।
৭৮ মিনিটে কোচ আলেজান্দ্রো গোটা ম্যাচে নিষ্প্রভ টোনি ডোভালে-কে তুলে নামালেন সদ্য মেক্সিকো ফেরত এনরিকে এসকুয়েদাকে। শেষের দিকে এনরিকে চেষ্টা করলেও ব্যবধান বাড়াতে পারেননি। বাগানের ক্যালডেইরা, সনি, ওমর হলুদ কার্ড দেখলেন। ইস্টবেঙ্গলের চুলোভা, ব্র্যান্ডন, জবিও হলুদ কার্ড দেখেছেন।
এই ফিরতি ডার্বি জিততে বেশি মরিয়া ছিল গঙ্গাপাড়ের ক্লাব। প্রথম লেগে এগিয়ে গিয়েও হারতে হয়েছিল ২-৩ ফলে। তাই বদলা নেওয়ার সুযোগ যেমন ছিল, তেমনই লিগের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে জেতা ছাড়া উপায় ছিল না সনি-শিল্টনদের। কিন্তু তা আর হল না। ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্টে ছয় নম্বরেই আটকে থাকল মোহনবাগান। আর ১৩ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট হল ইস্টবেঙ্গলের। চার নম্বরেই রইল তারা। এই জয় যে লেসলি ক্লডিয়াস সরণির শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবকে লিগ জয়ের ব্যাপারে অক্সিজেন দিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ছবি-তুলেছেন শান্তনু বিশ্বাস।