দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সরকার। মাঝে লাঞ্চ ব্রেকের সময় সরকারের দেওয়া খাবার খেতে অস্বীকার করেন কৃষকরা। তাঁরা বলেন, আমরা খাবার নিয়ে এসেছি। বিজ্ঞান ভবনের বাইরে একটি ভ্যান দাঁড়িয়েছিল। কৃষক নেতারা সেই ভ্যানে খাবার এনেছিলেন। বিজ্ঞান ভবনে তাঁরা নিজেদের আনা খাবার খান।
বিজ্ঞান ভবনের ভেতরে তোলা ছবিতে দেখা যায়, একটা লম্বা টেবিলে বসে নেতারা দ্রুত লাঞ্চ সেরে নিচ্ছেন। কয়েকজন মাটিতে বসে খাচ্ছেন। এক কৃষক নেতা বলেন, “সরকার আমাদের খেতে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা নিজেদের খাবার নিয়ে এসেছি।” অপর এক কৃষক নেতা বলেন, “আমরা মিটিং-এর সময় সরকারের দেওয়া চা সুদ্ধু খাইনি।”
একটি সূত্রে জানা যায়, লাঞ্চ ব্রেকের আগে কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, কেন তাঁরা সরকারের আইনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন। তিনটি কৃষি আইনের কোথায় কোথায় গলতি আছে বলে তাঁরা মনে করেন। বৈঠকের পরের পর্বে সরকার কৃষক নেতাদের সামনে বক্তব্য পেশ করবে। সরকারের তরফে উপস্থিত আছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর, পীযূষ গয়াল এবং সোমপ্রকাশ।
কৃষকদের দাবি, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করা হোক। একটি সূত্রে খবর, সরকার কোনওভাবেই আইন বদলাতে রাজি নয়। কিন্তু কৃষকদের লিখিত নিশ্চয়তা দেওয়া হতে পারে যে, আগামী দিনে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পেতে তাঁদের অসুবিধা হবে না। কৃষকরা দাবি করেছেন, চুক্তিচাষ নিয়ে কোনও বিরোধ হলে আদালতে যেন তার মীমাংসা হয়। আইনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে বিরোধের মীমাংসা করবেন সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট। সরকার ভেবে দেখছে চাষিদের এই দাবি মেনে নেওয়া যায় কিনা।
কৃষকরা আইন বাতিলের দাবিতে অনড়। তাদের প্রতিনিধিরা বলেছেন, শুধু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পেলেই কৃষকদের সমস্যার সমাধান হবে না।
এদিন কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকের আগে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং-এর সঙ্গে বৈঠকে বসে সরকার। বৈঠকের পরে অমরিন্দর সিং বলেন, কৃষক আন্দোলন কেবল পাঞ্জাবের ইস্যু নয়, তার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা জড়িত। কৃষক ও সরকার, উভয়ের কাছে আমি আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেন আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মিটিয়ে নেয়।
অমরিন্দর সিং-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে। আমি এই বিরোধ মীমাংসা করার কেউ নই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি জানিয়ে দিয়েছি, সরকারের সঙ্গে কোথায় আমার দ্বিমত আছে। তাঁকে অনুরোধ করেছি, দ্রুত বিরোধ মিটিয়ে নিন। কারণ এর ফলে পাঞ্জাবের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া বিষয়টা জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত।”
এর আগে মঙ্গলবার সরকার কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল, কৃষি আইন নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হবে। কৃষকরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।