কুণালের নিশানায় এসএফআই

0
443

দেশের সময়ওয়েব ডেস্কঃ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় যখন উত্তাল দেশ, তখন ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেও সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইকে নিশানা করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ। একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে একাধিক ঘটনার কথা তুলে ধরে বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কুণাল।

২০১২ সালের ৯ এপ্রিল দিল্লির যোজনা কমিশনের দফতরের সামনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন এসএফআই সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও ছাত্রনেতা শতরূপ ঘোষের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে কুণাল লিখেছেন, “দিল্লিতে যোজনা পর্ষদের সামনে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে চূড়ান্ত লাঞ্ছনা ভুলে গেলেন কমরেড? সেই অসভ্যতার ক্ষমা চেয়েছেন কেউ?”

তিনি আরও লিখেছেন, “এসএফআই বা বামেদের উপর আক্রমণ অবশ্যই নিন্দার। কিন্তু তারা কোনওদিনও মারেনি? পুলিশের মদতে আক্রমণ চালায়নি? বাংলায় ছাত্র পরিষদ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা ডিএসও-র অভিজ্ঞতা কী বলছে? সেসব আজ ভুলিয়ে দিয়ে শুধু নিজেদের আক্রান্ত হওয়ার ছবিটা দিলে চলবে?”

বাম জমানার শেষ তিন বছর বাদ দিলে প্রায় পুরো সময়টাই ছাত্র সংসদগুলিতে এসএফআইয়ের একাধিপত্য ছিল। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সিপিএমের স্থানীয় লোকাল কমিটির মেম্বাররাই কলেজ নিয়ন্ত্রণ করেন। দোর্দণ্ডপ্রতাপ এলাকার বাম নেতাদের সামনে দাঁড়িয়ে কলেজ ভোটে বিরোধীরা মনোনয়ন দেবে, সেই পরিসরটুকুও ছিল না। পরিস্থিতি এমন জায়াগায় গিয়েছিল সিপিএম নেতা গৌতম দেবকে প্রকাশ্যে বলতে হয়েছিল, “কলেজগুলোতে ভোট না করে আমরা সব মাতব্বর তৈরি করেছি। আমাদের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।”

অনেকের মতে, কুণাল বোধহয় সেই প্রায়শ্চিত্তের কথাটাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এখানেই থামেননি কুণাল। বিজেপির উত্থানের পিছনে সিপিএমের যোগও টেনেছেন। লিখেছেন, “মনে পড়ে, ১৯৮৮-র বিকেল। বিজেপি তখন লোকসভায় মাত্র ২। অন্ধ কংগ্রেস-বিরোধিতা থেকে রাজীব গান্ধীকে সরাতে শহিদ মিনার ময়দানে হাতে হাত ধরে ভিপি সিং, জ্যোতি বসু, অটলবিহারী বাজপেয়ীর সভা? জাতীয় স্তরে ঐক্য! বিজেপি ২ থেকে ৮৪। দায় এড়াবেন?”

সাম্প্রতিক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়র ঘটনার কথাও তুলে ধরেন কুণাল। তিনি লেখেন, “আমি বিজেপি নই। কিন্তু এটা বলব, যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব কর্মসূচিতে বাবুল সুপ্রিয় ঢুকছিলেন, তখন বিনা প্ররোচনায় তাঁকে বাধা দেওয়া, শারীরিক নিগ্রহ করাটা যদি সমর্থনযোগ্য বিপ্লব হয়, তাহলে এমন বিপ্লব তো বামেদেরও হজম করতে হবে। তা সে লালঝান্ডার যে শাখাপ্রশাখাই হোক না কেন। তখন যারা বিপ্লব সমর্থন করেছিলেন, আজ প্রতিবাদী কেন? আমি পছন্দ করি না, তাই একজন মন্ত্রীকে আটকে চুল টানা যায়? অপূর্ব!”

এই ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠনটিও। এক এসএফআই নেতার কথায়, “কুণালবাবু এখন চিটফান্ড মামলায় জামিনে আছেন। তাই উনি তৃণমূল-বিজেপির সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলতে চাইছেন। দিদি-মোদী দু’জনকে খুশি না রাখতে পারলে ওঁকে আবার হয়তো জেলে যেতে হবে। তাই এইসব লিখেছেন।”

Previous articleআরও সুসজ্জিত এবার বইমেলা
Next articleট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি হাসান রুহানির

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here