দেশেরসময়ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারীর আকার ধারণ করেছে। চীন সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে তিন হাজারের উপর মানুষ মারা গেছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিচ্ছুটি নেই। নবান্ন থেকে শুক্রবার গোটা রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বলে দেন, ‘করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। রাজ্যে কারও শরীরে করোনাভাইরাস মেলেনি।’
এরপরই মমতা বলে দেন, ‘ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলায় অ্যাডভাইসরি পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে কুইক রেসপন্স টিম তৈরি রয়েছে। তাছাড়া সব হাসপাতালেই উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে।’ করোনা নিয়ে আতঙ্কের জেরে বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক ও ওষুধের কালোবাজারি চলছে।
অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্কবার্তা দিয়ে মমতা বলেন, ‘মানুষের বিপদের সময় ওষুধের দাম বাড়াবেন না। মাস্কের কালোবাজারি রুখতে ইতিমধ্যেই পুলিশকে নজর রাখার কথা জানিয়েছি।’ প্রয়োজনীয় মাস্ক ও ওষুধের জন্য কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছেন মমতা। রাজ্যবাসীর জন্য মমতার উপদেশ, ‘হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট কিংবা জ্বর মানেই করোনা নয়।
তবে হাঁচি, কাঁশির সময় রুমাল ব্যবহার করুন। বারবার হাত ধুয়ে নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্কুল পড়ুয়াদের দিকে আলাদা নজর দেওয়া দরকার। নিজে সুস্থ থাকুন। অন্যকেও সুস্থ রাখুন।’ করোনা নিয়ে রাজ্যবাসী যাতে অযথা দুশ্চিন্তা না করেন তাই ২৪ ঘণ্টার জন্য হেল্পলাইন নম্বরও খোলা হয়েছে।
হেল্পলাইন নম্বরটি হল ০৩৩–২৩৪১–২৬০০। আর কল সেন্টার নম্বর হল ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২।
করোনা ঠেকাতে অন্তর্দেশীয় উড়ানেও চেকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা দরকার বলে জানিয়েছেন মমতা। এছাড়া মমতা বলেছেন, ‘সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। করোনা নিয়ে কী করবেন। আর কী করবেন না তা নিয়ে লিফলেট প্রকাশ করছে রাজ্য সরকার। সবচেয়ে বড় কথা অযথা আতঙ্কিত হবেন না। তবে সাবধানতা অবলম্বন করুন।’
আর এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এর পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন এই রাজ্যে করোনাভাইরাসের ভয় ঠেকাতে কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার করোনা রুখতে টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এসব ছিল প্রশাসনিক ঘোষণা। এর পাশাপাশি এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে সাধারণ মানুষকে এই ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে হবে তা নিয়েও বিস্তারিত জানান। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে তিনি যা যা জানতে পেরেছেন সেসব রীতিমতো হাতেকলমে শেখান।
মমতা এদিন বলেন, বারবার সম্ভব হলে প্রতি ঘণ্টায় হাত ধুতে হবে। হাতে স্যানিটাইজার লাগানোর সময়ে খেয়াল রাখতে হবে কোনও অংশ বিশেষ করে হাতের তালু বাদ যাচ্ছে কিনা। এছাড়াও হাঁচি, কাশির সময়ে কী ভাবে মুখ ঢাকতে হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, নিজে ভাল থাকলেই হবে না সকলকে ভাল রাখতে হবে। বাড়ির পরিচারক, পরিচারিকা থেকে গাড়ির ড্রাইভার সকলের স্বাস্থ্যের দিকেই নজর দেওয়ার আবেদন রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।