দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ফেরানো ইস্যুতে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল। লকডাউনের শুরু থেকে যে বিতর্ক চলছে তাকেই মঙ্গলবার উস্কে দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর বুধবার তারই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে ফের আক্রমণ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের।

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি আদৌ ‘করোনা এক্সপ্রেস’ বলেননি। সাধারণ মানুষ বলছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর তার পরেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “উনি কিছুই জানেন না। নিজের দোষ এতদিন আমলাদের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। এখন সাধারণ মানুষের উপরে চাপাচ্ছেন। উনি করোনায় মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে অডিট কমিটি গড়লেন। পরে বিতর্ক হতেই দায় এড়িয়ে গেলেন। এখন ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ মন্তব্য নিয়েও ডিগবাজি খাচ্ছেন। আসলে সরকারটা ভূতে চালাচ্ছে।”

পরিযায়ী শ্রমিদের বাংলায় ফেরানোর প্রশ্ন যেদিন থেকে উঠেছে সেই দিন থেকেই রাজ্যে শুরু হয় রাজনীতি। কখনও রাজ্য সরকারের অনীহা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, কখনও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনও করেছিলেন অমিত শাহ। 

কিন্তু মঙ্গলবার বিজেপির নেতা হিসেবে সেই ইস্যুতে আক্রামণ শানান প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল চালাচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু অবাক করা বিষয় যে ওই ট্রেনকে ‘করোনা স্পেশাল’ বলে শ্রমিকদের অপমান করেছেন মমতা দিদি। ওই ট্রেনই তৃণমূল সরকারকে এক্সিট রুট দেখাবে।”

এদিন নবান্নে তারই জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “আমি কিন্তু কোনও দিনই করোনা এক্সপ্রেস বলিনি। অমি বলেছিলাম পাবলিক বলছে। আপনারা যদি আমার সেদিনের স্টেটমেন্ট বের করেন দেখবেন, আমি বলেছিলাম পাবলিক এটাকে করোনা এক্সপ্রেস বলছে!”

এর পরেই সল্টলেকে নিজের বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সেখানে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তাভাবনা করে কথা বলা উচিত। অনুরোধ করব, ভেবে কথা বলুন যাতে বারবার এই রকম পিছিয়ে আসতে না হয়।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এখন যাই বলুন না কেন মানুষ ওই মন্তব্য ভুলবে না। পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরাও ভুলবেন না। দিলীপ বলেন, “সেটা বুঝতে পেরেই এখন ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন দিদি। তবে ওনাকে নয়, মানুষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথাই বিশ্বাস করবে।”

এদিনও দিলীপ অভিযোগ তোলেন, রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় অর্থ খরচ হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস যোজনার টাকায় বাড়ি হচ্ছে না। গ্রাম সড়ক যোজনার অর্থ ফেরত যাচ্ছে। গ্রামে পাকা রাস্তা হচ্ছে না। রাজনৈতিক কারণে মানুষের কষ্ট বাড়ানো হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ভিডিও বার্তার উল্লেখ করে বলেন, তৃণমূলের কেলেঙ্কারি এখন তৃণমূলই ফাঁস করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here