দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের আবহেই পড়শি দেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে জোর দিতে চাইছে নয়া দিল্লি। সম্প্রতি বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফরে দুই দেশের সম্পর্কে গতি আনার চেষ্টা করেছেন। করোনার টিকা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। ভারত জানিয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশকেই প্রথম টিকা পাঠানো হবে। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর সোমবার টুইট করে জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি বৈঠকে বসতে চলেছে দুই দেশ।
সূত্রের খবর, জয়শঙ্করের সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা হয়েছে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের। দু’দেশের ‘জয়েন্ট কনসালটিভ কমিশন’-এর বৈঠক এ মাসেই হওয়ার কথা হয়েছে। আগামী দিনে ঢাকা সফরের ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। গতকাল টুইট করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ডক্টর এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে খুব ভাল কথা হয়েছে। জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠক খুব তাড়াতাড়ি হবে। দুই দেশই আগামীদিনে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে।”
Warm conversation with FM Dr. A.K. Abdul Momen of Bangladesh. Agreed to hold our Joint Consultative Commission very soon. Will continue to work closely to reach the ambitious goals set by our leaders.
— Dr. S. Jaishankar (@DrSJaishankar) September 7, 2020
বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সে দেশের বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। করোনার টিকা তৈরির বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। শ্রিংলা জানিয়েছিলেন, করোনাকালে আর্থিক সঙ্কট ও অন্যান্য নানা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে কীভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয় তাঁর। শ্রিংলা জানান, বিশ্বের ৬০ শতাংশ ভ্যাকসিনই তৈরি হয় ভারতে। তাই করোনার টিকা তৈরি হলে প্রতিবেশী দেশগুলিকে তা সরবরাহ করতে কোনও কার্পণ্য করবে না ভারত। কোভিড পরিস্থিতিতেও দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালের সঙ্গে করোনার টিকা নিয়ে চুক্তি হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের। সেরাম জানিয়েছে, ভারতের বাজারে কোভিশিল্ড টিকা চলে এলে সেটা পৌঁছে দেওয়া হবে বেক্সিমকোকেও। এই টিকা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনও করতে পারবে তারা। সেই লাইসেন্সও দেওয়া হয়েছে।
নেপালের সঙ্গে সম্প্রতি কূটনৈতিক দ্বৈরথ হয়ে গেছে ভারতের। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের পরিস্থিতি চরমে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার। সম্প্রতি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বাণিজ্যিক দিকে যা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের এক নতুন পথ খুলে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ‘এয়ার বাবল’ তৈরি করে দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। প্রচুর বাংলাদেশী নাগরিক ভারতের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার সুবিধা পান। কিন্তু কোভিড মহামারীর কারণে আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই যাতায়াত স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘এয়ার বাবল’ চালু হলে বাংলাদেশের রোগীরা যেমন এই পরিষেবার সুবিধা নিতে পারবেন, তেমনি ভারত থেকেও বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা উপদেষ্টারা নানারকম প্রকল্পের কাজে বাংলাদেশে আসতে পারবেন।