দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উত্তুরে হাওয়ার দাপটে কাঁপছে দক্ষিণবঙ্গ তার উপড়ে সকাল থেকেই কুয়াশায় মুখ ঢেকেছে সূর্য৷ তাপমাত্রার নিম্নগতির দৌড়ে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের সঙ্গে সমান ভাবে পাল্লা দিচ্ছে শ্রীনিকেতন, পুরুলিয়া। আজ শনিবারও এরকম হাড়কাঁপানো ঠান্ডা থাকবে। প্রায় সর্বত্রই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের থেকে কয়েক ডিগ্রি নীচে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, উত্তুরে হাওয়া জোরালো হওয়াতেই দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা এতটা কমে গেছে। শনি, রবিবারও পরিস্থিতি এরকমই থাকবে।
শুক্রবার দার্জিলিংয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর কালিম্পংয়ে ৫.৫। শ্রীনিকেতনের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা নামে ৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, পুরুলিয়ায় ৭.৪। ভোর থেকে প্রবল উত্তুরে হাওয়ায় শ্রীনিকেতন ও পুরুলিয়ায় গড়ে ওঠে হিম শীতল পরিবেশ। হাড়কাঁপানো শীতের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই সকালে বাড়ি থেকে বের হননি। যাঁদের একান্তই বেরোতে হয়েছিল তাঁরা এদিক ওদিক একটু সুযোগ পেয়েই আগুনের তাপে হাত–পা সেঁকে উষ্ণ হয়ে নিয়েছেন।
বেলার দিকে রোদে একটু আরাম হলেও সন্ধে থেকেই ফের কনকনে পরিস্থিতি। শীতে জবুথবু অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সর্বত্রই। বেশিরভাগ জায়গাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে বা আশপাশে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ২–৩ ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুটোই স্বাভাবিকের থেকে কম থাকায় এবং হাওয়ায় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ায় উত্তুরে হাওয়া যখনই বইছে তা যেন গায়ে তীরের মতো বিঁধেছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে উত্তর ভারত জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে গড়ে উঠেছে শীতল দিনের পরিস্থিতি। পাশাপাশি বইছে উত্তুরে হাওয়া। ওই অঞ্চল দিয়ে বয়ে আসা ঠান্ডা হাওয়ার স্রোত কাঁপিয়ে দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষকে। আর এই হাওয়ার কারণেই দুপুরের রোদও তেমন গায়ে লাগছে না। রোদের তেজ কমার পর এই উত্তুরে হাওয়ার টানেই কনকনে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে গ্রীষ্মকালে হাওয়ায় থাকা অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প গরমের অনুভূতি আর অস্বস্তি দুই–ই বাড়িয়ে দেয়। শীতকালে আবার অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প উল্টো পরিস্থিতি তৈরি করে। এখন সেরকমই হচ্ছে। অতিরিক্ত আর্দ্রতা উত্তুরে হাওয়ার টানে কনকনে পরিস্থিতি তৈরি করে দিচ্ছে। ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১–১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকলেও, অনুভূতি হচ্ছে ৭ থেকে ৮ সেলসিয়াসের মতো।
কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকছে ৯০ শতাংশের ওপর, এরকমটা সাধারণত বর্ষাকালে হয়ে থাকে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবে কয়েকদিন পর আর্দ্রতা কমবে। তখন চামড়ায় টান ধরবে। তাতে শীতের আমেজ দীর্ঘ হবে। নতুন করে যদি কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা ঝঞ্ঝার প্রভাবে মেঘ ঢুকে না আসে তাহলে বড়দিন তো বটেই নতুন বছরে শুরুতেও বেশ কনকনে শীত উপভোগ করা যাবে।