দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ কয়েকেদিনের মধ্যেই লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দেবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷ তার আগেই নবান্ন থেকে জারি হয়ে গেল নতুন নির্দেশিকা।

১ মার্চ তারিখে নবান্ন থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সমস্ত সরকারি হাসপাতালের জন্য। যে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১ মার্চ ২০১৮ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত যে হাসপাতালে যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েছেন, তাঁদের নাম, ঠিকানা-সহ একটি তালিকা তৈরির দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের। নবান্ন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হবে হাসপাতালগুলিতে। মুখ্যমন্ত্রীর সই করা চিঠি। সেই ঠিকানা ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে হাসপাতালগুলিকে। এবং এই খরচাও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের।

চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, বিনা মূল্যে ঔষধ প্রকল্পে আপনাকে একজন উপভোক্তা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরে ও প্রকল্পের অধীনে সর্বপ্রকার বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আগামী দিনেও যে এই ধারা বজায় থাকবে, তাও চিঠিতে স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, গ্রামীণ হাসপাতাল-সহ রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরের আওতায় থাকা সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবাকেন্দ্রে এই চিঠি পৌঁছে যাচ্ছে। নবান্ন থেকে জারি হওয়া নির্দেশিকায় এই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজকে ‘মোস্ট আর্জেন্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছবে মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি।

ভোটের আগে এমন চিঠি পাঠানোর পিছনে ভরপুর রাজনীতি রয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীদের অনেকে। তাঁদের কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তো অনেক দিন ধরেই এই প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু কোনওবার তো এমন চিঠি দিতে দেখা যায়নি। তাও আবার দেওয়া হচ্ছে শেষ এক বছরের তালিকা ধরে। অর্থাৎ যাঁদের স্মৃতিতে ব্যাপারটা টাটকা তাঁদেরকেই চিঠি পাঠাতে চাইছে সরকার। যদিও নবান্ন সূত্রের দাবি, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। সৌজন্য এবং জনসংযোগের কারণেই এই চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প বাংলায় বন্ধ করে দিয়েছেন মমতা। বিজেপি রাজনীতি করছে এই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রের ওই প্রকল্প আমাদের দরকার নেই। সেই সঙ্গে দিদি এ-ও বলেছেন, আমরা আমাদেরটা ঠিক করে নিতে পারব। ওঁদের দয়া নেব না।

কয়েকদিন আগে তারকেশ্বরের সরকারি কর্মসূচিতে গিয়েও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প কী তা নিয়ে বিস্তারিত বক্তৃতা দিয়েছিলেন মমতা। কোন রোগে কত টাকা সরকার দেবে, কারা এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় পড়বেন, তা যত্ন করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। স্মার্ট কার্ড দেখিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, মহিলাদের ক্ষমাতায়নের জন্য এই স্মার্ট কার্ড বাড়ির মহিলাদের নামে হবে। যাতে বিবাহিত হলেও তিনি তাঁর বাবা-মায়ের চিকিৎসার সুযোগ পান। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, রাজ্যের সাড়ে সাতকোটি মানুষ এর ফলে উপকৃত হবেন।
আয়ুষ্মান ভারত’-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের চিঠি পাঠাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। যে কারণে ‘আয়ুষ্মান ভারত’কে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বন্ধ করেছেন বলে মনে করেন অনেকে। ফসলবিমা যোজনার ক্ষেত্রেও দিল্লির নেতাদের ছবি দিয়ে প্রচার করা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা। এ বার সেই একই পদ্ধতিতে মমতাও চিঠি পাঠানো শুরু করলেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here