দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছেই। রবিবার শহিদ মিনারের সভা থেকে বারবার এই কথা বলেছেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তবে এটাই প্রথমবার নয়, আগেও বেশ কয়েকবার তাঁর মুখে এমন প্রত্যয় শোনা গেছে। প্রতিবারই তিনি বলেছেন, শুধুই ক্ষমতায় আসাই নয়, দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। এবার শুধু নিজে মুখে বলাই নয়, দলীয় নেতাদের মনে এই বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজটাও করে গেলেন একদিনের সফরে। জানিয়ে গেলেন প্রতি মাসেই তিনি বাংলায় আসবেন। তিন থেকে সাত দিন করে তিনি এবং নাড্ডা বাংলায় কাটাবেন আগামী মাস থেকেই।
রবিবার শহিদ মিনারের সভা শেষ করে কালীঘাটে পুজো দিতে যান অমিত শাহ। সেখান থেকে সোজা চলে যান নিউ টাউনের একটি হোটেলে। সেখানে তিন পর্বে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এত লম্বা ছিল তাঁর বৈঠক যে নির্দিষ্ট সময়ে দিল্লি রওনাও পিছিয়ে দেন। রবিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে দিল্লি রওনা হওয়ার কথা ছিল অমিত শাহের। কিন্তু সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা কলকাতায় পৌঁছতে দেরি করেন। তিনি আসেন সন্ধে সাতটা নাগাদ। এর পরে কোর কমিটির বৈঠক হয়। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, প্রতিটি বৈঠকেই হাজির ছিলেন অমিত শাহ। সব শেষ হতে হতে মধ্য রাত পার হয়ে যায়। এর পরে বিশেষ বিমানে নাড্ডা ও শাহ দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন।
নিউ টাউনের হোটেলে দলের নেতাদের সঙ্গে মোট তিন দফায় বৈঠক করেন অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ। প্রতিটি বৈঠকেই ছিলেন দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়। আর তাদের সামনেই দলকে পাঁচ টোটকা দিয়ে গেলেন অমিত।
রবিবার ছবিগুলি তুলেছেন- কুন্তল চক্রবর্তী।
১। আমরা ক্ষমতায় আসছিই। এই বিশ্বাসটা করতে হবে সব নেতাকে। কর্মী, সমর্থকদের মধ্যেও এই বিশ্বাস তৈরি করতে হবে। ধীরে ধীরে এই বিশ্বাস ভোটারদের মনের মধ্যেও ঢুকিয়ে দিতে হবে।
২। পুরভোটের প্রচার থেকে শুরু করে একেবারে থামতে হবে ক্ষমতায় আসার পরে। এর জন্য ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে পৌঁছে যেতে হবে ঘরে ঘরে। সব কর্মীকে কাজে নামাতে হবে।
৩। কবে সারদা, নারদের তদন্তের সিবিআই, ইডি কী করবে তার ভরসায় বসে থাকলে চলবে না। কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাদের মতো কাজ করবে। দলকে নিজের মতো কাজ করতে হবে।
৪। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির কোনও রকম ‘সেটিং’-এর অভিযোগকে পাত্তা দিলে চলবে না। এই ধরনের কোনও অভিযোগ কেউ তুললে তার বিরোধিতা করতে হবে। তৃণমূলের সঙ্গে দলের কোনও রকম সেটিংয়ের প্রশ্নই নেই।
৫। বিরোধী দল হিসাবে আরও শক্তিশালী বানাতে হবে নিজেদের। সব সময়ে আন্দোলনের মধ্যে থাকতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের জন্যই কেন্দ্র এই রাজ্যে উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালাতে পারছে না বলে প্রচার করতে হবে। তুলে ধরতে হবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি।
এই পাঁচ টোটকা দেওয়ার পাশাপাশি অমিত শাহ জানিয়েছেন আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তিনি বাংলার উপরে বিশেষ নজর দেবেন। প্রতি মাসে তিনি বাংলায় আসবেন। তিনি একাই নন সর্বভারতীয় সভাপতি নাড্ডা প্রতি মাসে একাধিকবার এই রাজ্যে আসবেন। ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি কেমন চলছে তার নিয়মিত রিপোর্ট নেওয়া হবে।