দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত হায়দরাবাদে গণধর্ষণ ও নারকীয় খুনে ধৃত চার ধর্ষক।

হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার ভিসি সাজ্জানার জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটে-চারটে নাগাদ তদন্ত চলাকালীন পুলিশি হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করে চার অভিযুক্ত। তখনই গুলি করে মারা হয় তাদের।

এ দিন তদন্তের জন্য ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার কাজ করছিল পুলিশ। তখনই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এনএইচ ৪৪-এ, যেখানে গত সপ্তাহের বুধবার তরুণী পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে আগুনে পুড়িয়ে খুন করে তারা। চলছিল তদন্ত, জেরা। এ সময়ে হঠাৎই চার ধর্ষক পালাতে যায় বলে দাবি করেছে পুলিশ। তখনই চালাতে হয় গুলি।

ঘটনাস্থলেই মারা যায় চার ধর্ষক।

গত সপ্তাহের বুধবার রাত ৯টা ২০ নাগাদ, হায়দরাবাদে এনএইচ ৪৪-এর ওপর পেশায় পশুচিকিৎসক ওই ২৬ বছরের তরুণীর স্কুটির চাকা পাংচার করে দিয়েছিল অভিযুক্তরা। তার পরের এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারে তারা।

ধরা পড়ার পরে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে, তরুণী যাতে চিৎকার না করতে পারেন, সে জন্য তাঁর গলায় জোর করে মদ ঢেলে দিয়েছিল তারা। এমনকি তরুণীকে পোড়াতেও তাঁরই স্কুটির পেট্রোল ঢালা হয়েছিল বলেও স্বীকার করেছে তারা।


এই ঘটনায় তদন্তে নেমে, দু’দিন পরে, শুক্রবার চার জন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু নামের এই চার অভিযুক্তকে শনিবার ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছিলেন তেলঙ্গানার শাদনগরের ম্যাজিস্ট্রেট। তেলঙ্গানার চেরাপল্লীর সেন্ট্রাল জেলে ছিল তারা। ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে তাদের বিচার হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
সারা দেশের মানুষ ফেটে পড়েছিল ক্ষোভে, প্রতিবাদে। দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়ে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে দাবি করেছিলেন গণহত্যার।

এ সবের মধ্যেই শুক্রবার কাকভোরে খবর এল এনকাউন্টারের। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় নিহত চার ধর্ষকই।


নির্যাতিতা ও নিহত তরুণীর বাবা জানিয়েছেন, ঘটনায় শান্তি পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “দশ দিন হয়ে গেল আমার মেয়েটা চলে গেছে। তার পরে শাস্তি হল ওর অপরাধীদের। সরকার ও পুলিশের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এবার নিশ্চয় শান্তি পাবে আমার মেয়েটা।”


প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্ভয়া-কাণ্ডে নিহত তরুণীর আশা দেবীও। তাঁর কথায়, “আমি খুব খুশি এই শাস্তির কথা শুনে। এই ক’দিন এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসতে পারিনি আমি। আজ শান্তি পেলাম। খুব ভাল কাজ করেছে পুলিশ। যিনি এনকাউন্টার করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেন কোনও পদক্ষেপ না করা হয়। আমার মেয়েটার খুনিরাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাজা পাক।”


এ দিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল ভিড় জমতে থাকে এনকাউন্টার ঘটার জায়গায়। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয় গোটা এলাকা। শয়ে শয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সাধারণ মানুষ কৌতূহলে উঁকিঝুঁকি মারতে থাকেন। ভিড় সামাল দিতে তৎপর হয় পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here