দেশের সময়: রাজ্যে ফণী নিয়ে পরিস্থিতি জানতে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সত্যিই ফোন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী? এই নিয়ে যখন বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর তুঙ্গে, তার মধ্যেই ফণী’‌র ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ বিতর্ক গড়াল সোমবার পঞ্চম দফার নির্বাচনেও৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফণী নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ে যোগ দিতে রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রীর এই দাবিকে মিথ্যে বলে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার৷ রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে, ফণীর রিভিউ মিটিং নিয়ে পিএমও থেকে কিছু জানানোই হয়নি৷ ফলে দুর্যোগ নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।


উল্লেখ্য, শুক্রবার খড়্গপুরে কার্যত কন্ট্রোল রুম খুলে ঘূর্ণিঝড় ফণীর বিপর্যয় মোকাবিলায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই রাজ্যের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রের তরফে যোগাযোগ করা হয়নি। তাই যা ব্যবস্থা করতে হয়েছে সব রাজ্যকেই। রবিবার রাজ্যের দাবি খারিজ করে পিএমও জানিয়ে দেয়, দু’বার ফোন করেও মমতার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের সভা থেকে সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে মোদী বলেন, ‘‌দিদির এত দম্ভ, যে দু’বার ফোন করার পরেও তিনি ফোন ধরেননি। কিন্তু তারপরেও রাজ্যকে সবরকম সাহায্যের জন্য প্রস্তুত কেন্দ্র।’‌ এখানেই রাজনীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কারণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কিছু না করার অভিযোগ তোলার পরই পালটা এমন অভিযোগ তুললেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
রাজ্যে ফণীর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মোদী মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন না করে রাজ্যপালের কাছে খবর নেন বলেও অভিযোগ উঠেছে৷

এর পরেই গোপীবল্লভপুরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ খারিজ করে বলেন, ‘‌লোক দেখানো বৈঠকের আড়ালে রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী। আপনি যখন কলকাতায় ফোন করছেন, তখন আমি খড়্গপুরে বসে আছি। কোনও সুযোগ ছিল না কথা বলার। নবীন পট্টনায়েকের ভোট হয়ে গিয়েছে। তাই আপনার সঙ্গে ঘুরেছেন। আমার ভোট হয়ে গেলে আমিও যেতাম। কিন্তু ভোটের সময় আপনার সঙ্গে আমি কোনও কিছু শেয়ার করব না। এটা ভাল করে মাথায় ঢুকিয়ে নিন। এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে আমি কোনও কথা বলব না। বলতে হলে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলব। আপনার এত সাহস কী করে হয় যে মুখ্যমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে মিটিং করবেন? মুখ্যসচিব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথায় চলেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায় চলবেন না।’‌
এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‌রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কিছুই জানানো হয়নি৷ ফোন বা চিঠি কিছুই আসেনি৷ অতএব বৈঠকে যোগ না দেওয়া বা দেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না৷’‌ এদিকে ফণী নিয়ে বৈঠক করতে চেয়ে সোমবার হঠাৎই নবান্নে চিঠি পাঠায় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। ভোটে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে বৈঠক করতে অস্বীকার করে নবান্ন। ‌‌ফণী নিয়ে পরিস্থিতি জানতে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সত্যিই ফোন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী? এই নিয়ে যখন বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর তুঙ্গেপর্যবেক্ষকদের মতে, ফণী যতটা না ঝড় তুলেছিল বাংলায়, তার থেকে পরবর্তী পরিস্থতি নিয়ে মোদী-দিদি তরজা তার চেয়েও ভয়ানক আকার ধারন করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here