দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অরুণাচলের সিয়াং পার্বত্য এলাকায় ভেঙে পড়া বায়ুসেনার পণ্যবাহী এএন-৩২ বিমানের ধ্বংসাবশেষের ছবি আগেই সামনে এনেছিল বায়ুসেনা। ঘন জঙ্গল ও গিরিখাত পরিবেষ্টিত এলাকা হওয়ায় বারে বারেই থমকে যাচ্ছিল উদ্ধারকাজ। অবশেষে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ১৩ জন যাত্রীর খোঁজ মিলল। হেলিকপ্টার নামিয়ে মৃত বায়ুসেনাদের দেহ উদ্ধার করা হলো বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ। খোঁজ মিলল ব্ল্যাক বক্সেরও।
অসমের জোড়হাট থেকে রওনা দেওয়ার পরই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল এএন-৩২। ১৩ জন বায়ুসেনা সমেত বিমানটি কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিল সিয়াং-এর পার্বত্য মেচুকার ঘন জঙ্গলে। দীর্ঘ আটদিনের খোঁজের পরে গত মঙ্গলবার সিয়াং জেলারই পেয়াম সার্কেলের মধ্যে এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় বায়ুসেনার এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। জানানো হয়, একজন যাত্রীরও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে শুধু ছাইয়ের স্তূপ।
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, হেলিকপ্টারে চাপিয়ে মৃতদের দেহ নিয়ে আসা হচ্ছে অসমে। দুর্ঘটনায় যাঁদের প্রাণ গিয়েছে তাঁদের মধ্যে ছিলেন, উইং কম্যান্ডার জিএম চার্লস, স্কোয়াড্রন এইচ বিনোদ, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আর থাপা, এ তানওয়ার, এস মোহান্তি, এমকে গর্গ, ওয়ারেন্ট অফিসার কেকে মিশ্র, অনুপ কুমার এস, কর্পোরাল শারিন এনকে, বিমানকর্মী এসকে সিং, পঙ্কজ, অসামরিক কর্মী পুতালিও রাজেশ কুমার।
ভেঙে পড়া বিমানের ব্ল্যাক বক্স অক্ষতই রয়েছে। তার মধ্যে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা থেকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বায়ুসেনার এক অফিসার।
রাশিয়ায় তৈরি এএন–৩২ বিমানটির সঙ্গে গত সোমবার পশ্চিম সিয়াং জেলার পার্বত্য মেচুকা অঞ্চলে দুপুর একটার সময়ে শেষবার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু তারপরই গ্রাউন্ড কন্ট্রোলের সঙ্গে বিমানটির রেডিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সি–১৩০ জে, দু’টি এমআই–১৭ ও দু’টি এএলএইচ হেলিকপ্টার, সুখোই উড়িয়ে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছিল বায়ুসেনা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল নৌসেনা, ইন্দো–তিব্বত সীমান্ত পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ। ঘন অরণ্য এবং দুর্গম গিরিখাত এলাকায় তল্লাশির জন্য কার্টোস্যাট ও রিস্যাট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সন্ধানকাজে সাহায্য করছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।
প্রযুক্তিগত ত্রুটি যে এই এএন-৩২ বিমানের হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ সেটা স্বীকার করেছে বায়ুসেনা। চলতি বছরে বায়ুসেনার অন্তত ন’টি এয়ারক্রাফ্ট এমন দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে জাগুয়ার, দু’টো মিগ-২৭ জেট, দু’টো মিগ-২১ জেট, মিগ-১৭, মিরাজ-২০০০, সূর্যকিরণ হক এবং এএন-৩২।