দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা অতিমারীর জেরে এবছর পুজোয় আনন্দ একেবারেই ফিকে। আর তা দেখে প্রকৃতিরও যেন মনখারাপ। পুজোর দ্বিতীয় দিনেও সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। ষষ্ঠীতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া দিয়েই এবার বাংলায় দেবীর বোধন হয়েছে। সপ্তমীর সকালেও একই ছবি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে আরও গভীর হয়েছে। যার প্রভাবে আজ, সপ্তমীতেও দিনভর বৃষ্টি চলবে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

কী জানিয়েছে হাওয়া অফিস?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যাোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। কলকাতা থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে এটি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে’’।

নিম্নচাপের প্রভাবে কী হবে?

সঞ্জীব বন্দ্যাোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় সপ্তমীতে দুই ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।  পাশাপাশি কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে’’।

নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলবর্তী জেলা মূলত পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনায় ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। হাওয়ার সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিমি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেডে বইবে ঝোড়ো হাওয়া, সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৫০ কিমি।

মৎস্যজীবীদের ২২-২৪ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তুমুল বৃষ্টির জেরে শহুরে এলাকায় জল জমতে পারে। সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের যেতে বারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

পুজো নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ালেও ষষ্ঠীতে আবহাওয়া মনোরম করে দিয়েছে নিম্নচাপ। কলকাতার তাপমাত্রা একটানা সাত দিন ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল। এ দিন তা নেমে আসে ২৭.৬ ডিগ্রিতে নেমে আসে। যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি কম। কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ০.৬ মিলিমিটার। বলার মতো বৃষ্টি হয়েছে দিঘা ও সাগরে, ২৫ মিলিমিটার। আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, এ দিন মেঘের সঞ্চার হয়েছে মূলত বাংলাদেশের উপরেই। তাই সেখানেই বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং বাদলা আবহাওয়া। দুইয়ে মিলে গোটা রাজ্যেই এ বারে ষষ্ঠীর দিন পুজো দেখার ঢল ছিল অনেক কম। কিছু ক্ষেত্রে উৎসাহী লোকজন মণ্ডপের কাছে ঘোরাঘুরি করলেও পুজো কমিটিগুলি তাদের দূরেই রেখেছে। কোথাও ১০ জনের বেশি লোককে একসঙ্গে মণ্ডপের সামনে জমতেও দেওয়া হয়নি। বোধন সন্ধ্যায় কলকাতা সহ জেলার সমস্ত রাস্তা এমনই ফাঁকা ছিল ৷এক পুলিশকর্তার ব্যাখ্যা, আদালতের নির্দেশের জেরে ভিড় একেবারেই কম।তার উপরে বৃষ্টি আবহাওয়া মানুষকে আরও ঘর বন্দি করেছে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here