দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভোট কবে তা নির্ধারিত হবে আজ। বুধবার বৈঠকে বসতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। আর এই বৈঠকেই নির্ধারণ হতে চলেছে ভোট কবে, কত দফায় হবে। অন্যদিকে বুধবার রাতে শহরে পা রাখছেন উপ–নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। বৃহস্পতিবার সমস্ত জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশপাশি ভোটকর্মীদের দায়িত্ব সহ বিভিন্ন রূপরেখা তৈরি করবেন বলে সূত্রের খবর।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি অসমের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আগামী ৭ মার্চের পর যে কোনওদিন ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এই ইঙ্গিতের পর থেকেই নানা জল্পনা শুরু হয়। আর সেই প্রেক্ষাপটে আজ বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই বৈঠকের পরই কি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করবে কমিশন? সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ এই বৈঠকে উঠে আসতে পারে।

এদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রুটমার্চ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবার কলকাতায় আসতে চলেছে আধাসেনা। ২৩,০০০ বুথ বেড়েছে এই রাজ্যে। ৬টি জেলাকে স্পর্শকাতর চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। তার জন্য বাড়তি তৎপরতা নিতে চলেছে তারা।তবে আজকের বৈঠকে কী বেরিয়ে আসে, এখন তার দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের৷

চলতি বছরেই দেশের পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, কেরলে ইতিমধ্যেই নির্বাচনী লড়াই শুরু হতে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। চলছে রণনীতি তৈরির শেষলগ্নের কাজ৷ সেই আবহেই বুধবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন। কোন রাজ্যে কবে ভোট, কীভাবে তা সম্পন্ন হবে তা চূড়ান্ত করতেই আজ এই বৈঠক। মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

দেশে ফের বেড়েছে করোনা ভাইরাসের দাপট। সেই আবহে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর কমিশন। কোন রাজ্যে কত সিআরপিএফ মোতায়েন হবে এবং কত দফায় ভোট হবে তা স্থির হবে আজকের এই বৈঠকে৷ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় এপ্রিলের ৪ থেকে ৫ মে পর্যন্ত ছ’ দফায় নির্বাচন হয়েছিল। তবে এবার সেই সংখ্যা বেড়ে ৭ কিংবা ৮ দফা হতে আরে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, রাজ্যে প্রায় ৬,৪০০টি ভোটকেন্দ্রকে সংবেদনশীল বলে বিবেচনা করা হয়েছে। দেশের বাকি চার রাজ্যের তুলনায় যা অনেক বেশি। নির্বাচনী দামামা বাজতেই অশান্ত হয়েছে বাংলা। সেই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে বাংলায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যাও ৭৮,৯০৩ থেকে বাড়িয়ে ১,০১,৭৯০টি করা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মার্চ পাস্ট ও এলাকা পরিদর্শনও শুরু করে দিয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী প্রচারের সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনীর কমপক্ষে ১২৫টি কোম্পানি সিআরপিএফ রাজ্যে আসবে, এমনটাই জানা গিয়েছে। তবে নির্বাচনী দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন রাজ্য প্রশাসনকে কিছুটা অবাক করেছে।


নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের মতে, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৬০টি কোম্পানি, সশস্ত্র সীমা বাল (এসএসবি) এর ৩০টি কোম্পানি, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ২৫টি কোম্পানি এবং পাঁচ কোম্পানি সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) এবং ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি) মোতায়েন করা হবে নির্বাচনে। 

বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে যে বিশেষভাবে নজর রাখছে নির্বাচন, তা রাজ্যকে ঠারেঠোরে আগেই বুঝিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সুরক্ষা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বর্তমানে প্রতিদিন যোগাযোগ রেখে চলেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন।


পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন আগামী বৃহস্পতিবার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে রাজ্য সফর করবেন বলে সূত্র জানিয়েছে। গত মাসেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ফের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা নির্বাচন অফিসার, জোনাল আইজি, ডিআইজি, এসপি, সমস্ত সিপির সঙ্গেও দেখা করবেন সুদীপ জৈন। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশনে একটি রিপোর্টও জমা দেবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here