দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ ২৮ বছর পরে ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলার রায়দান হবে আজ। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম জন্মভূমির স্থানে থাকা বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। এই ঘটনার আগে গোটা ভারত জুড়ে রথযাত্রা করেছিলেন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। বাবরি মসজিদ ভাঙার এই ঘটনা ও তার পরবর্তীকালে গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে চলা হিংসার ঘটনায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনারই রায়দান বুধবার করতে চলেছে লখনউয়ের বিশেষ আদালত।
এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্তরা হলেন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশী, প্রাক্তন মন্ত্রী উমা ভারতী ও উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং। তবে এই অভিযুক্তদের কেউই এদিন আদালতে উপস্থিত থাকবেন না বলে খবর। ৯২ বছরের আডবাণী ও ৮৬ বছরের জোশী বয়সের কারণে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি উমা ভারতী। কল্যাণ সিংও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই মুহূর্তে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, তাদের মধ্যে বর্তমানে ৩২ জন বেঁচে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে হিংসায় ইন্ধন যোগানো, ধর্ম নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি প্রভৃতি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। লখনউয়ের বিশেষ আদালতের তরফে এদিন অভিযুক্ত সবাইকেই উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও অভিযুক্ত প্রধান চারজন উপস্থিত থাকবেন না বলেই জানিয়েছেন।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর যখন করসেবকরা গিয়ে বাবরি মসজিদ ভাঙছিল তখন সেখানেই আডবাণী, জোশী, উমা ভারতী উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্যের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সেই সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিজেপি নেতা কল্যাণ সিং। এই ঘটনার পরে গোটা রাজ্য জুড়ে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল তা সামলাতে ব্যর্থ হয়েছিল কল্যাণ সিং সরকার। প্রায় ৩ হাজার মানুষ মৃত্যু হয় হিংসায়। এই ঘটনার পরে তাঁর সরকার ফেলে দেওয়া হয়।
এই মুহূর্তে উত্তরাখণ্ডের এক হাসপাতালে ভর্তি বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী। তিনি বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তিনি জামিনের আবেদন করবেন না।
এর আগে গত ২৪ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের সামনে নিজের বক্তব্য রাখেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। তাঁকে প্রায় ১০০টি প্রশ্ন করা হয়। তার আগের দিনই নিজের বক্তব্য রাখেন মুরলী মনোহর জোশীও। দুই নেতাই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
১৯৯৩ সালে এই ঘটনায় ৪৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট আনে সিবিআই। সেখানে এই নেতারা ছাড়াও শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের নামও ছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্ট লখনউয়ের বিশেষ আদালতকে নির্দেশ দেয়, দু’বছরের মধ্যে এই মামলার শুনানি শেষ করতে। তারপরেও একটু সময় চাওয়া হলে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। সেই নির্দেশ মেনে ৩০ সেপ্টেম্বরই হতে চলেছে এই মামলার রায়দান।